বিস্ময়কর কোরআন

কুরআনে সিয়ামের ধারণা

Brief Summary of Results and Conclusion:

১. আনফুস বনাম নুফূস (Anfus vs. Nufus): কিছু নুফূস আছে যাদের মৃত্যুর পর স্থগিত অবস্থায় রাখা হয়েছে, পুনর্বাসনের (بعث) জন্য অপেক্ষমাণ। আল-হিছাব (حساب) হলো একমাত্র পথ যার মাধ্যমে তারা তাদের শেখা সম্পূর্ণ করতে পারবে এবং তাদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারবে।

২. এই নুফূসদের মধ্যে এমনও রয়েছে যারা আল্লাহ্‌তে বিশ্বাস করে কিন্তু জ্ঞানমূলক একত্ববাদ (epistemic monotheism) অন্বেষণ করেনি। 

৩. সূরা বাকারার আয়াত ২:১৮৫–১৮৭ মূলত ‘যারা বিশ্বাস এনেছিল’ তাদের সম্বোধন করলেও স্পষ্টভাবে একটি নতুন ‘কুরআনিক ব্যবস্থা’র দিকে নির্দেশ করছে। এই বিষয় না জানাটা মারাত্মক ভুল হবে!

৪. “রমজান মাস”-এর ধারণা সম্ভবত এর ভাষাগত শাব্দিক অর্থের চেয়ে আলাদা, কারণ ‘শুকনো ও গরম সময়কাল’ ধারণাটি এর শব্দতাত্ত্বিক ব্যাখ্যার অংশ। আমরা কোনো পরিভাষার ভাষাগত ভিত্তি উপেক্ষা করতে পারি না! তবে বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলে এই সময়কাল ভিন্ন। কিছু দেশে এমন গরম-শুকনো সময়কালই নেই! উপরন্তু, এই ‘গরম-শুকনো সময়কাল’ বর্তমান ঘূর্ণায়মান হিজরি ক্যালেন্ডারে সম্ভবত প্রতিফলিত হয় না

৫. এখনো পর্যন্ত আমি এমন কোনো স্পষ্ট ও চূড়ান্ত প্রমাণ পাইনি যা দেখায় যে প্রত্যেক মুসলমানের ওপর রোজা (খাদ্য, পানি ও যৌনতা থেকে বিরত থাকা) আবশ্যক—এমনকি এর বিস্তারিত নিয়মও না। তবে প্রমাণ আছে যে, রাসূল মুহাম্মদ ﷺ এবং তার সাহাবীদের জন্য এটি একটি ফরজ ইবাদত ছিল। আরও প্রমাণ আছে যে, কিছু মুত্তাক্বীদের জন্য রোজা আবশ্যক। এটাই আমার বেছে নেওয়া অবস্থান।

৬. উপরোক্ত সব কিছু সত্ত্বেও, আমি নিজে রমজানের রোজা **বর্তমান প্রচলিত পদ্ধতিতেই পালন করছি এবং সেই অনুসরণে থাকতে উপদেশ দিচ্ছিআপনি এটা বাতিল করে দেবেন না যতক্ষণ না আপনি এই উপস্থাপনার বাকি অংশ দেখেন। তারপর আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিন!

৭. রাসূল মুহাম্মদ ﷺ কখনোই তারাবীহ (রমজান মাসে কিয়ামুল লাইল) শুরু করেননি, বা অনুমোদনও দেননি। তবে, (রমজান মাস ছাড়া) কিয়ামুল লাইল একটি বৈধ ও অত্যন্ত সুপারিশকৃত ইবাদত মু’মিনদের জন্য। অন্যদিকে, রমজানে তারাবীহ (কিয়ামুল লাইল) মুত্তাক্বীন এবং কোরআনের অগ্রসর সাধকদের জন্য ফরজ, কিন্তু শুধু এই এক মাসে সীমাবদ্ধ নয়! আপনি উপস্থাপনার বাকি অংশ দেখলে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।

এই উপস্থাপনায়,
আপনি জানতে পারবেন কিভাবে আপনি আজ আপনার পূর্বপুরুষদের জন্য সহায়ক হতে পারেন,
যারা বর্তমানে الحِسَاب (হিছাব)-এর পর্যায়ে রয়েছেন এবং মরিয়াভাবে আপনার সাহায্যের প্রয়োজন!

এখন কিছু মৌলিক ধারণা বুঝে নেওয়া যাক:

عِدَّة বনাম عُدَّةً এর ধারণা

• عِدَّة (‘ইদ্দাহ) কোনো কিছুর ‘সংখ্যা’ (পরিমাণ হিসেবে) বোঝায়।

سَيَقُوْلُوْنَ ثَلٰثَةٌ رَّابِعُهُمْ كَلْبُهُمْۚ وَيَقُوْلُوْنَ خَمْسَةٌ سَادِسُهُمْ كَلْبُهُمْ رَجْمًاۢ بِالْغَيْبِۚ وَيَقُوْلُوْنَ سَبْعَةٌ وَّثَامِنُهُمْ كَلْبُهُمْ ۗقُلْ رَّبِّيْٓ اَعْلَمُ بِعِدَّتِهِمْ مَّا يَعْلَمُهُمْ اِلَّا قَلِيْلٌ ەۗ فَلَا تُمَارِ فِيْهِمْ اِلَّا مِرَاۤءً ظَاهِرًا ۖوَّلَا تَسْتَفْتِ فِيْهِمْ مِّنْهُمْ اَحَدًا (18:22)

They (companions of the cave and the written tomes) will say (about themselves): “Three40 whose fourth is their dog!” And others say: “Five whose sixth is their dog!” while seeking to expel people with (erroneous) claims regarding the undisclosed. And they say: “Seven, and their eighth is their dog!” Say: “My lord is best at disclosing the evidence-based knowledge about their count!” None know them41 except a few, and therefore, do not discuss anything about them, except (to provide) a superficial disclosure42, and do not seek the opinion of anyone from them (the companions of the cave and the written tomes), about them43. (18:22)

তারা (গুহার সঙ্গী এবং লিখিত গ্রন্থের অধিকারীরা) (নিজেদের সম্পর্কে) বলবে: “তিন40 যাদের চতুর্থ হল তাদের কুকুর!” আর অন্যরা বলবে: “পাঁচ যাদের ষষ্ঠ হল তাদের কুকুর!” অপ্রকাশিত বিষয়ে (ভুল) দাবি করে যখন মানুষকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করছে। আর তারা বলবে: “সাত, এবং তাদের অষ্টম হল তাদের কুকুর!” বল: “আমার প্রভু তাদের সংখ্যা সম্পর্কে প্রমাণ-ভিত্তিক জ্ঞান প্রকাশ করতে সর্বোত্তম!” অল্প কয়েকজন ছাড়া কেউ তাদেরকে জানে না41, অতএব, তাদের সম্পর্কে কোন আলোচনা করো না, উপরিভাগের প্রকাশ (প্রদান করা) ছাড়া42, এবং তাদের (গুহার সঙ্গী এবং লিখিত গ্রন্থের অধিকারীদের) কারো থেকে তাদের সম্পর্কে মতামত চাইবে না43। (18:22)

عُدَّة (‘উদ্দাহ) ‘সামগ্রী’ (সামরিক অর্থে) বোঝায়

وَلَوْ أَرَادُوا۟ ٱلْخُرُوجَ لَأَعَدُّوا۟ لَهُۥ عُدَّةً … (৯:৪৬) – সূরা আত-তাওবা

যদি তারা (বিশ্বাসীদের সাথে সামরিক অভিযানে) বের হতে চাইত, তবে তারা এর জন্য সামগ্রী প্রস্তুত করত… (৯:৪৬)

আল হিছাব الحِسَاب এবং ইহতিছাব الحَسَنَات এর ধারণা

আল-হিসাব (الحِسَاب) এমন একটি সময়কালকে বোঝায়, যেখানে নুফূসদের স্থগিত অবস্থায় রাখা হয়, তারা যন্ত্রণায় ও বিভ্রান্তিতে ভোগে, এবং ‘ইদ্দাহ‘ অর্জনের চূড়ান্ত সাফল্যের প্রতীক্ষায় থাকে।

সাধারণভাবে, আল-হিছাব (al-Ḥissāb) কুরআনে বহুবার বিভিন্ন রূপে এসেছে—ক্রিয়া, বিশেষ্য, مصدر (মূলধাতু), বিশেষণ ইত্যাদি রূপে। অধিকাংশ মানুষ ধারণা করে এটি কেবল “হিসাব-নিকাশের প্রক্রিয়া” বোঝায়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো: আল-হিছাব প্রকৃতপক্ষে কোন হিসাব-নিকাশের কাজ নয়, বরং একটি সময়কাল বোঝায়।

এই দৃষ্টিভঙ্গি বহু মানুষের চোখে এখনো ধরা পড়েনি। কিন্তু এর প্রমাণ এতটাই ব্যাপক—সম্পূর্ণ যিকির (ذِكْر)-এর অন্তর্নিহিত ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের ভিত্তিতে—যে আল-হিছাব এক ধরনের অপেক্ষার সময়কাল, যেখানে নুফূস (আত্মাগুলো) স্থগিত অবস্থায় থাকে, যন্ত্রণা ও বিভ্রান্তির মধ্যে।

কেন?
কারণ তারা ফলাফলের অপেক্ষায়—রায় ঘোষণা হবে, কিংবা পরবর্তী ধাপে উত্তরণ ঘটবে (আশা করা যায় ফিরদাউস, নচেৎ অবনমন)।

এই অবস্থা বাস্তব জীবনের কিছু পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করা যায়:
– একজন ছাত্র উদ্বিগ্নভাবে অধ্যক্ষের কক্ষে ডাকার অপেক্ষায় বসে আছে।
– অথবা ইন্টারভিউ দেওয়ার পর ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছে, অনিশ্চিত অবস্থায়।
– অথবা আদালতে রায় ঘোষণার আগে, বিচারকের মুখের দিকে চেয়ে বসে আছে।

এই মাঝামাঝি সময়টাই—চাপ, অস্থিরতা ও মানসিক যন্ত্রণায় পরিপূর্ণ—এটাই হিছাব (Ḥissāb)

এই সময়কালে তারা একটি নির্দিষ্ট ‘ইদ্দাহ (Ɛiddah) পূর্ণ করার অপেক্ষায় থাকে—এটি একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক কাজ, পরীক্ষা, বা আত্মিক উন্নয়ন। কেবল এই ‘ইদ্দাহ পূর্ণ করার পরই তারা হিছাব পর্যায় থেকে পরবর্তী স্তরে যেতে পারে।

এই ব্যাখ্যা অনুমাননির্ভর নয়; এটি কুরআনিক তথ্য-নির্ভর। যদিও এখানে সব প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি, তবে সমর্থনকারী উপাদান বিপুল পরিমাণে রয়েছে। আমরা দেখতে চলেছি, সূরা ১৮-এর আয়াত ১৭৮ থেকে ১৮৭ পর্যন্ত এই ধারণাটির দিকেই ইঙ্গিত করে।

আয়াত ১৭:১২
وَجَعَلْنَا ٱلَّيْلَ وَٱلنَّهَارَ ءَايَتَيْنِ فَمَحَوْنَآ ءَايَةَ ٱلَّيْلِ وَجَعَلْنَآ ءَايَةَ ٱلنَّهَارِ مُبْصِرَةً لِّتَبْتَغُوا فَضْلًا مِّن رَّبِّكُمْ وَلِتَعْلَمُوا عَدَدَ ٱلسِّنِينَ وَٱلْحِسَابَ وَكُلَّ شَىْءٍ فَصَّلْنَٰهُ تَفْصِيلًا

আমরা রাত ও দিনকে দুটি নিদর্শন বানিয়েছি, অতঃপর আমরা রাতের নিদর্শনকে মুছে দিয়েছি, আর দিনের নিদর্শনকে দেখার উপযোগী করেছি, যাতে তোমরা তোমাদের প্রভুর অনুগ্রহ অন্বেষণ করো এবং যাতে তোমরা বছরগুলোর সংখ্যা এবং হিসাব জানতে পারো। এবং আমরা প্রত্যেকটি বিষয় বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছি।

এটি কুরআনের জন্য একটি নতুন ধারণা—আমরা তা দেখতে যাচ্ছি।

এবং এই আয়াতে রয়েছে সেই স্বাক্ষর:
يُفَصِّلُ ٱلۡأٓيَٰتِ لِقَوۡمٖ يَعۡلَمُونَ
আল্লাহ্‌ আয়াতসমূহকে কৌণিক শাখাবিন্যাসে বিভাজন করেন এবং বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করেন তাদের জন্য, যারা অনুসন্ধানকারী বা প্রমাণভিত্তিক জ্ঞান রাখে।

এবং সুতরাং, যখন আমরা প্রমাণভিত্তিক জ্ঞান অনুসরণ করলাম, তখন আমরা যে সিদ্ধান্তে পৌঁছালাম তা হলো—

“হিছাব” (Ḥissāb) মানে একটি ‘সময়কাল’ (period of time)।

আমি সময়ের ধারণাটিকে গুরুত্ব দিচ্ছি না। অর্থাৎ, এটা কোনো নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধ সময় নয়—যেমন, “১০ দিন আর পর শেষ,” কিংবা “জেলে তিন বছর কাটাতে হবে, তারপর মুক্তি।” না, এটা তা নয়।

এটি একটি সময়কাল যার মধ্যে আপনাকে নির্দিষ্ট সংখ্যক পরীক্ষা সম্পন্ন করে সফল হতে হবে। তাই মূল বিষয় হলো পরীক্ষার সংখ্যা। যদি সময়কাল হয় ৩,০০০ বছর, তাহলে ৩,০০০ বছর; যদি হয় ৩০ মিনিট, তাহলে ৩০ মিনিট—এভাবেই চলতে পারে।

সুতরাং, আমি আশা করি আপনি ধারণাটি বুঝতে পারছেন। সময়কাল কোনো মূল বিষয় নয়। মূল বিষয় হলো ʿIddah — পরীক্ষার সংখ্যা, যা আল-হিসাবের মূল কথা। আল-হিসাব কোনো নির্দিষ্ট, সীমাবদ্ধ সময় নয়—যদিও এতে সময় জড়িত। এটি হাজার হাজার বছর, এমনকি লক্ষ লক্ষ বছর স্থায়ী হতে পারে, অথবা এক নজরার মতো অতি ক্ষণস্থায়ী হতে পারে।

আমি আশা করি আপনি বুঝতে শুরু করছেন কীভাবে আসল ধারণাগুলো বিকৃত হয়েছে—কীভাবে আমরা ছোটবেলা থেকে পরকাল নিয়ে এমন ভুল ধারণা শিখে আসছি।

তাহলে, إِحْتِسَاب (ইহতিছাব) এর ধারণাটি কী? এটি কি রমজানের সাথে সম্পর্কিত?

অবশ্যই, যারা কিছু হাদিস জানেন, তারা জানেন যে আমাদের প্রিয় মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন। ইহ্‌তিছাব বলতে বোঝায় ইহজীবনে devotional acts। দয়া করে লক্ষ্য করুন: এটা এই জীবনের devotional acts এর ব্যাপার। আর আল-হিছাব মৃত্যুর পরে।

আমি যে devotional acts এর কথা বলছি, যা ইহ্‌তিছাবের ধারণা, তা এই জীবনে প্রযোজ্য, এবং এগুলো আমাদের আল-হিছাবের যন্ত্রণার সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে। অর্থাৎ, ইহ্‌তিছাব এমন একটি কাজ যা আমরা করি যাতে আমরা হিছাবের যন্ত্রণা এড়াতে পারি।

ঠিক আছে, তাহলে এটা কীভাবে কাজ করে?

ভাবুন তো। আপনি একজন ক্রীড়াবিদ—আপনি প্রশিক্ষণ নেন, বারবার প্রশিক্ষণ নেন, কঠোর পরিশ্রম করেন। কেন? কারণ আপনি আসল পরীক্ষার সময় হতাশা এড়াতে চান।

যদি আপনি একজন বক্সার হন, তাহলে আপনি স্পারিং করবেন, আঘাত গ্রহণ করবেন, প্রশিক্ষণ নিবেন—ছয় মাস বা এক বছর কঠোর পরিশ্রম করবেন—এরপর আসল দুই মিনিটের প্রতিযোগিতা। কারণ ওই দুই মিনিটের লড়াইয়ের সময় আপনি আঘাত নিতে চান না।

তাহলে কী করতে হবে? আপনি প্রস্তুতি নেবেন। প্রস্তুতির সময় কি আঘাত নেন? অবশ্যই। আপনি নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতিতে কষ্ট সহ্য করতে প্রস্তুত থাকেন—এটাই ইহ্‌তিছাব।

অতএব, আল-হিছাবের সময় লজ্জা, যন্ত্রণার, এবং কষ্টের হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া—এটাই ইহ্‌তিছাবের ধারণা।

আমাদের প্রিয় মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি এভাবেই এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন? হ্যাঁ। আমরা এ হাদিসে তা দেখব। আবার বলি, এটা একটি সমর্থনমূলক হাদিস—আপনারা সবাই জানেন, আমরা হাদিসগুলোকে মূল উৎস হিসেবে ব্যবহার করি না, বরং কুরআন থেকে যা বুঝি তা সমর্থন করার জন্য ব্যবহার করি।

মনে রাখবেন, হিছাব—আমরা প্রথমে কুরআন থেকেই বুঝেছি। যেমন আমি বলেছি, এ ব্যাপারে প্রচুর প্রমাণ আছে। কিন্তু চলুন দেখি, ধারণাটি কী বলে।

তাহলে, আমি আয়াতে প্রবেশ করার আগে আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত একটি হাদিস আছে, যা সাহিহ্‌ আল-বুখারীতে উল্লেখ আছে:

أنَّ رَسولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ قَالَ: مَن قَامَ رَمَضَانَ إيمَانًا واحْتِسَابًا غُفِرَ له ما تَقَدَّمَ مِن ذَنْبِهِ. قَالَ ابنُ شِهَابٍ: فَتُوُفِّيَ رَسولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ والأمْرُ علَى ذلكَ ثُمَّ كانَ الأمْرُ علَى ذلكَ في خِلَافَةِ أبِي بَكْرٍ وصَدْرًا مِن خِلَافَةِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عنْهمَا

বর্ণনাকারী: আবু হুরাইরা | উৎস: সাহিহ্‌ আল-বুখারী | বর্ণনা নম্বর: ২০০৯ | প্রামাণিকতা: সাহিহ্‌

Traditional অনুবাদ: আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় তারাবীর সালাতে দাঁড়াবে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে। হাদীসের রাবী ইব্‌নু শিহাব (রহঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইনতিকাল করেন এবং তারাবীর ব্যাপারটি এভাবেই চালু ছিল। এমনকি আবূ বকর (রাঃ)- এর খিলাফতকালে ও ‘উমর (রাঃ)- এর খিলাফতের প্রথমভাগে এরূপই ছিল।

Our translation: Whoever restores, in the fashion of Ramaḍān, believing and seeking “Ḥissāb” (in this life), he shall be granted reconnection despite whatever preceded of his sins! Ibn Shihab said: “The messenger of Allahh died and the situation was like that, then it was also that way during Abu Bakr’s khilafah, and the front part of Umar’s khilafah.”

যে ‘রমজানের’ ধরণে পুনরুদ্ধার করে, বিশ্বাস করে এবং (এই জীবনে) পরকালের হিছাবের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে, তার পূর্বের যত পাপই থাকুক না কেন, তাকে পুনঃসংযোগ দেওয়া হবে! ইবন্ শিহাব বলেন: “আল্লাহর রাসূল (সা.) ইন্তেকাল করলেন এবং তখন অবস্থান এমনই ছিল, তারপর এটি আবু বকর এর খিলাফতের সময়ও ছিল, এবং উমর এর খিলাফতের প্রথম সময়েও এইভাবেই ছিল।

তাহলে, রাসূল আল্লাহ ﷺ — এটাই বলছে: مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا — যার অর্থ, যে ব্যক্তি পুনরুদ্ধার করে — কখন? অবশ্যই এই জীবনে। মুহাম্মদ ﷺ এই জীবন সম্পর্কে বলছেন।

রমজান—তিনি কি সেই নির্দিষ্ট সময়কালকেই বোঝাচ্ছেন? হ্যাঁ, তার এবং তার সঙ্গীদের জন্য, অবশ্যই, যেমন আমি বলেছি। তার এবং তার সঙ্গীদের জন্য এটা ফরজ ছিল। কিন্তু এতে রয়েছে পুরস্কার, আর আল্লাহ আমাদের প্রিয় সাঃ কে কিছু জ্ঞান দিয়েছেন, যা তিনি আমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন।

সেই জ্ঞান হলো: যদি আপনি রমজানের ধারণাটি অনুসরণ করেন—আপনি দেখতে পাবেন রমজানের অর্থ কী—এটা আপনার ধারণার মত নয়। যেমন আমি বলেছি, ভাষাবিজ্ঞান traditional অর্থকে সমর্থন করে না।

তো, مَنْ قَامَ رَمَضَانَ — রমজান, অর্থাৎ “যে ব্যক্তি রমজানের মতো একটি অবস্থা বা ধরণের সঙ্গে পুনরুদ্ধার সম্পন্ন করে…” রমজান এখানে মাসের নাম নয়; এটি একটি হাল (অবস্থা বা পরিস্থিতি)। এভাবেই মুহাম্মদ (সা.) কথা বলতেন, মাঝে মাঝে কুরআনের ভাষার ধাঁচে: مَنْ قَامَ رَمَضَانَ, বিশ্বাস রেখে এবং احْتِسَابًا (হিছাবে সচেষ্ট হয়ে) — অর্থাৎ এই জীবনে বিশ্বাস এবং পরকালের হিছাবের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, মানে নিজেকে সেই হিছাবের জন্য প্রস্তুত করছে, এক ধরনের রিহার্সাল করছে।

“সে জীবনে পূর্বের সমস্ত পাপ সত্ত্বেও পুনঃসংযোগের সুযোগ পাবে।”

এটাই বর্ণনাটি। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ — ابْنُ شِهَابٍ বলেছেন, “রাসূল আল্লাহ (সা.) মারা গেলেন এবং পরিস্থিতি এমন ছিল,” যেমন তিনি বর্ণনায় বললেন, “এবং এই অবস্থা আবু বকরের খিলাফাতেও চলতে থাকল, যেটা ছিল ইতিহাস অনুযায়ী মুহাম্মদ (সা.)-র পর প্রায় দুই বছর, এবং উমরের খিলাফাতের প্রথম অংশেও একইরকম ছিল।”

তিনি ইঙ্গিত করছেন যে উমর পরে কিছু পরিবর্তন এনেছিলেন। এটিই বার্তাটি।

আল-বুখারী কেন এটি অন্তর্ভুক্ত করেছেন? আমি দেখেছি আল-বুখারী প্রায়ই আমাদের এই ধরনের বার্তা দেয়। এজন্যই আমি বারবার বলি, বর্ণনা ও হাদিসগুলোকে অবহেলা করবেন না, কারণ সেখানে অনেক রত্ন লুকানো থাকে, এবং আমাদের শেখা উচিত কীভাবে আল-বুখারী ও অন্যরা আমাদের কাছে তথ্য পাঠাচ্ছেন, এবং কীভাবে ভাষাবিজ্ঞানের মাধ্যমে একটু ‘আর্কিওলজিকাল ডিগ’ করে প্রকৃত বিষয়গুলো বুঝতে হবে।

আপনি ধরেছেন তো? এখানে তিনি বলছেন, “আধপথে, প্রায় প্রথম পাঁচ বছর উমরের খিলাফাতের (উমর ১২ বছর খলিফা ছিলেন), হয়তো পাঁচ বছর, হয়তো দশ বছর, হয়তো আট বছর — তখনও ‘وَقَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا’ ছিল, এরপর কিছু পরিবর্তন ঘটল।”

এটাই তিনি বলছেন।

তাহলে, আসুন আবার আয়াতে ফিরে যাই এবং হিছাব বিষয়ে একটু সংক্ষেপে আলোচনা শেষ করি।

হিছাব মূলত এমন একটি ব্যাপার যা মৃত্যুর পর ঘটে। আমরা এটা বুঝেছি। কিন্তু ইহতিছাব হলো এই জীবনে devotional act যা সেই হিছাব এর জন্য প্রস্তুতি বা রিহার্সালের মতো।

আশা করি এখন আপনি বুঝতে পারছেন আমরা কি নিয়ে কথা বলছি, কারণ আমরা বলেছি হিছাব শেষ হয় — আসলে, আপনি আপনার হিছাবে সফল হন যদি আপনি একটি নির্দিষ্ট Ɛiddah দক্ষতার সঙ্গে পূর্ণ করেন, কিছু জিনিসের একটি পরিমাণ যা আপনাকে অর্জন করতে হবে। আমরা বিস্তারিত দেখব।

And at night, (Alternatively: to avoid the suffering of night of ‘Ṣiyām), enter your slumber using it (the QurꜤān), as an additional (obligatory devotional act) for you, hoping that your lord revivifies you to a praised station. (17:79)

আর রাতে, (বিকল্পভাবে: ‘সিয়ামের’ রাতের কষ্ট এড়াতে), তোমার নিদ্রায় প্রবেশ করো এটি (কোরআন) ব্যবহার করে, তোমার জন্য একটি অতিরিক্ত (আবশ্যক ভক্তিমূলক কাজ) হিসেবে, আশা করে যে তোমার প্রভু তোমাকে একটি প্রশংসিত স্থানে পুনরুজ্জীবিত করবেন। (17:79)

“আইয়্যামাম মা’দুদাতান (أَيَّامًا مَّعْدُودَةً) এর ধারণা – সীমিত সংখ্যক দিন”

Have you not pondered those who (in the future would) have been allowed to learn a portion from the scripture, being invited to the scripture of Allahh to provide them linguistic discernment (to arbitrate) among them, but then a group among them refuses while they are dismissive: (3:23)

তুমি কি তাদের কথা চিন্তা করনি, যাদেরকে (ভবিষ্যতে) কিতাব থেকে কিছু অংশ শেখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের দিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যেন তা তাদের মধ্যে ভাষাগত বিচক্ষণতা প্রদান করে (ফয়সালা করা জন্য), কিন্তু তাদের মধ্যে একটি দল প্রত্যাখ্যান করে, যখন তারা তাচ্ছল্যপূর্ণ। (3:23)

আমি “ভবিষ্যতে” বলেছি কেন? কারণ, আরবি ভাষায় أَلَمۡ تَرَ إِلَىٰ এই অভিব্যক্তির মধ্যে এমন একটি ইঙ্গিত থাকে—এটি انْتِهَاء الْغَايَة অর্থাৎ ‘চূড়ান্ত পরিণতি’ বা ‘শেষ গন্তব্য’-এর দিকে নির্দেশ করে। সুতরাং, আল্লাহ্‌ (ﷻ) মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে বলছেন—একটি চূড়ান্ত পর্যায় কল্পনা করতে, যা তাঁর পরবর্তী যুগে আসবে।

ٱلَّذِينَ أُوتُواْ نَصِيبٗا مِّنَ ٱلۡكِتَٰبِ — একদল লোক যাদেরকে কিতাব (আসমানি গ্রন্থ) থেকে একটি অংশ শেখার সুযোগ দেয়া হয়েছে—

يُدۡعَوۡنَ إِلَىٰ كِتَٰبِ ٱللَّهِ — তারা আহ্বান পাচ্ছে আল্লাহ্‌র কিতাবের দিকে।

আজ তাদেরকে কে আহ্বান জানাচ্ছে আল্লাহ্‌র কিতাবের দিকে? আজ, ইনশাআল্লাহ্‌ আমরাই—যারা কুরআনকে বুঝতে চায় এবং এর সঙ্গে পুনরায় সংযুক্ত হতে চায়।

لِيَحۡكُمَ بَيۡنَهُمۡ — যাতে তাদের মাঝে ফয়সালা করার ভাষাগত বিচার উঠে আসে কিতাব থেকে—অর্থাৎ, কুরআন থেকে।

তবুও, তাদের একদল তা প্রত্যাখ্যান করে—তারা এটিকে একেবারেই অগ্রাহ্য করে এবং অবজ্ঞা করে। 

That is because they said: We shall not be affected by the ‘Nār’ (the punishment of hellfire, as they understand it) except a limited number of days (a strictly limited time duration). And they were deluded in their religion by what they concocted. (3:24)

এটি এ কারণে যে, তারা বলেছিল: “আমরা ‘নার’ (দোজখের শাস্তি, যেমনটি তারা বুঝে) দ্বারা প্রভাবিত হব না, একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক দিন (অর্থাৎ, খুবই সীমিত সময়কাল) ব্যতীত।” আর তারা তাদের ধর্ম নিয়ে বিভ্রান্ত হয়েছিল তাদের উদ্ভাবিত মিথ্যা দ্বারা। (3:24)

How about, then, when we collect them, attributing them to a time in which there is no doubt, and then every nafs is remunerated only what it earned? And they are not transgressed against! (3:25)

তবে কী হবে তখন, যখন আমরা তাদের একত্র করব—একটি এমন সময়ে যুক্ত করে—যার মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই? তারপর প্রত্যেক নফসকে শুধু সে যা অর্জন করেছে, তাইই পরিপূর্ণভাবে প্রদান করা হবে। এবং তাদের প্রতি কোনো জুলুম করা হবে না! (3:25)

আপনাকে সেই সময়কাল—অর্থাৎ সেই নির্দিষ্ট মেয়াদের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। মনে রাখবেন, এখানে বিষয়টা কোনো নির্দিষ্ট ‘মুহূর্ত’ বা ‘ঘণ্টা’ নয়, বরং একটি পরিপূর্ণ সময়কাল, একটি ধারা বা দীর্ঘকালীন অবস্থা।

এই সময়কালটি এত গুরুত্বপূর্ণ কেন?

لَّا رَيْبَ فِيهِ — “এতে কোনো সন্দেহ নেই।”

অতএব, যদি আপনি সন্দেহ নিয়ে এই সময়কালে প্রবেশ করেন, তবে আপনি সেই সন্দেহের মধ্যেই অবস্থান করবেন। যতক্ষণ না আপনি নিজের সন্দেহ দূর করতে সক্ষম হবেন, ততক্ষণ এই সময়কাল থেকে আপনার মুক্তি হবে না। সেই সময়ের পরিসমাপ্তি, বলা যায়, আসবেই না—যতক্ষণ না আপনি ভুল ধারণা ও সংশয় থেকে বেরিয়ে আসেন। আর যদি এই ভুল ধারণাগুলো অহংকারের ভিত্তিতে গঠিত হয়ে থাকে—তাহলে সেই অহংকারও আপনাকে ত্যাগ করতে হবে।

আপনি সম্ভবত একটি হাদীস শুনেছেন, যা এ কথাকেই দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করে:
“যার অন্তরে অহংকারের অণু পরিমাণও থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।”

অর্থাৎ, আমাদের প্রিয় মুহাম্মদ ﷺ এই হাদীসের মাধ্যমে এই মর্মার্থটিই আপনাকে পৌঁছে দিয়েছেন। কাজেই, আমি যদি এখন সেই কথাই আবার আপনাকে মনে করিয়ে দিই, তবে এটা নতুন কিছু নয়। আমি কেবল সেই মূল কথাটিকেই সামনে আনছি—যেটি আপনাকে আগে হয়তো ঠিকভাবে শেখানো হয়নি।

কুরআন একটি নির্দিষ্ট সময়কাল উপস্থাপন করে, এবং সেই সময়কাল সম্পর্কে বলে:
لَّا رَيْبَ فِيهِ — “এতে কোনো সন্দেহ নেই।”

এটা মানে কী?

আপনার জন্য চূড়ান্ত পরিণতি হলো: يَوْمُ الْقِيَامَة—একটি পুনরুদ্ধারের দিন

পুনরুদ্ধার কিসের ভিত্তিতে?
এই ভিত্তিতে যে, আপনার ব্যাপারে আর কোনো সন্দেহ থাকবে না।

আপনি যদি সারাজীবন বলে থাকেন, “আমি মুসলিম,” “আমি আল্লাহ্‌র কাছে আত্মসমর্পণ করেছি,” এমনকি সালাত আদায় করেন, রোজা রাখেন, সব আমল করেন—তবু আপনার ভিতরে যদি এমন চিন্তা লুকানো থাকে, “আমি তো মুসলিমই—একটু ভুল হলে কী এমন হবে, কয়েকটা দিন কষ্ট হলেই তো হবে”—তাহলে এই বক্তব্য আপনার জন্য প্রযোজ্য।

কেন?
কারণ, এই মনোভাব অহংকারনির্ভর। এটি এমন এক বিকৃত দীন মেনে চলে, যা কুরআনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়—বরং উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া, তৈরি করা এক বিকল্প ধারার দীন।

এখন আবার ফিরে আসুন মূল কথায়:

لَّا رَيْبَ فِيهِ — “এই সময়কাল সম্পর্কে কোনো সন্দেহ নেই” বা “এই সময়কালে কোনো সন্দেহ নেই”—আরবিতে দুই অর্থই গ্রহণযোগ্য।

অতএব, সেই সময়কাল থেকে আপনি তখনই বের হতে পারবেন, যখন আপনার মধ্যে কোনো সংশয় অবশিষ্ট থাকবে না।
অর্থাৎ, হিছাব حِسَاب হল সেই অবস্থা, সেই পর্যায়—যেখানে আপনি অবস্থান করছেন কারণ আপনার জীবনকালে আপনি নিজেই নিজের চারপাশে প্রশ্নচিহ্ন রেখে গিয়েছেন।

وَوُفِّيَتۡ كُلُّ نَفۡسٖ مَّا كَسَبَتۡ — “তারপর প্রত্যেক নফসকে কেবল সে যা অর্জন করেছে—তা-ই পূর্ণভাবে প্রদান করা হবে।”

এই সময়কালে কী ঘটে?
প্রত্যেক নফস তার অর্জন অনুযায়ী সম্পূর্ণ প্রতিদান পায়।

অতএব, যদি আপনি এমন জীবন যাপন করে থাকেন—যেখানে ছিল অস্পষ্টতা, দ্বিধা, গাফিলতি—তবে সেই অনিশ্চয়তার মধ্যেই আপনাকে রাখা হবে।

আইনি ভাষায়, এটা অনেকটা প্যারোল অবস্থার মতো।
আপনি তখন পুরোপুরি শাস্তির আওতায় নেই, আবার পুরোপুরি মুক্তও নন—এক প্রকার বিচারাধীন স্থগিতাবস্থায় রয়েছেন।

এইটাই সেই ধারণা: প্যারোল।
আপনার বিশ্বাস, আচরণ, কর্ম—সবকিছুই প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়। আপনি তখন এক ধরণের সাসপেনশন-এ থাকেন—এক অনির্ধারিত অবস্থায়।

এটাই হলো হিছাব।

এই পুরো উপস্থাপনাটি কুরআনের একটি আয়াতের ব্যাখ্যা:

Say: “Of what concern would you be to my lord were it not for your (proper) supplication?” But you have rationalized (for yourselves or others) the belying (of Āyāt), and thus, it (whatever you have belied) shall be obligatory (upon you)! (25:77)

বলো: “তোমাদের (সঠিক) দোয়া না থাকলে, আমার প্রভু কাছে তোমাদের কী মূল্য থাকে?” কিন্তু তোমরা তো (আয়াতে) মিথ্যারোপ করাকে (নিজেদের বা অন্যদের জন্য) যুক্তিযুক্ত করে নিয়েছ—এবং তাই, এটি (যা কিছু তোমরা মিথ্যারোপ করেছ) বাধ্যতামূলক হবে (তোমাদের উপর)! (25:77)

আল্লাহর জন্যই রয়েছে মর্যাদাপূর্ণ, অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন লেবেলগুলি—“নাম” নয়, বরং বিশেষ্য। এমন সব বিশেষ্য, যেগুলোর মাঝে আছে গভীর অন্তর্দৃষ্টি। কুরআনের প্রতিটি শব্দ ও পরিভাষা আল্লাহ অত্যন্ত সচেতনভাবে ব্যবহার করেছেন, কিন্তু আপনি তবুও তা শিখতে অস্বীকার করেন। তবুও আল্লাহ ঘোষণা করেন:
“আল্লাহর জন্যই এই অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন লেবেলগুলো।”

সুতরাং, এই লেবেলগুলো দ্বারাই তাঁকে ডাকুন।

دُعَآؤُكُمۡۖ — যদি না আপনার দুআ থাকত, যথাযথ দুআ, তবে আল্লাহ আপনার কোনো তোয়াক্কা করতেন না।

এর অর্থ কী?

এর মানে হলো—যদি আপনি যথাযথ দুআ না করেন, তাহলে আপনি হিছাব-এ ফেলে দেওয়া হবে—ভুলে যাওয়া হবে, একপ্রকার সাসপেনশনে রাখা হবে।

এখন দেখুন পরবর্তী অংশ:

فَقَدۡ كَذَّبۡتُمۡআপনি তো মিথ্যারোপ করেছেন।

আপনি নিজের এবং অন্যদের জন্য কুরআনের আয়াতসমূহ, আল্লাহর নিদর্শন এবং সুস্পষ্ট নির্দেশনাগুলোকে প্রত্যাখ্যান করার যুক্তি দাঁড় করিয়েছেন। আপনি এগুলো অস্বীকার করেছেন।

কেউ কেউ প্রতিক্রিয়া দেয় এভাবে:

  • “এই শব্দটা একটা ফ্যালাসি।”

  • “এটা তো আব্রাহামিক বাচন।”

  • “আল্লাহ তো কোনো রোবট নন—এভাবে ডাকা লাগবে কেন?”

এইসব কিছুই কেবল যুক্তিকরণ (rationalization)। এই অজুহাতগুলো শুধুমাত্র মানুষকে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত স্পষ্ট প্রমাণকে বর্জন করার পথ করে দেয়।

কিন্তু আল্লাহ বলেন:
আপনি যুক্তি দাঁড় করিয়ে এসব প্রত্যাখ্যান করেছেন—এবং এর ফলে:
فَسَوۡفَ يَكُونُ لِزَامَۢاএটা আপনার উপর আবশ্যক হয়ে যাবে।

এর মানে কী?

হিছাব চলাকালীন, আগে যেমন বলা হয়েছিল, ইদ্দাহ  এমন কিছু শর্তসমূহ বহন করে যেগুলো আপনাকে পূরণ করতে হয়। আপনি যখন কিছু আয়াতে মিথ্যারোপ করেন বা অবজ্ঞা করেন, তখন ঐ আয়াত এবং এর সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তুসমূহ আপনার ইদ্দাহ-এর বাধ্যতামূলক অংশ হয়ে দাঁড়ায়।

আসুন আবার আয়াতটি দেখি:

مَا يَعۡبَؤُاْ بِكُمۡ رَبِّي لَوۡلَا دُعَآؤُكُمۡۖ فَقَدۡ كَذَّبۡتُمۡ فَسَوۡفَ يَكُونُ لِزَامَۢا

আমার রব তোমাদের কোনো তোয়াক্কা করতেন না যদি না তোমাদের দুআ থাকত। কিন্তু তোমরা তো মিথ্যারোপ করেছ, সুতরাং এটা তোমাদের ওপর অবশ্যম্ভাবী হয়ে যাবে।

অর্থাৎ:
আপনাকে শিখতেই হবে কীভাবে যথাযথভাবে দুআ করতে হয়।

কিন্তু আপনি এসব আয়াতকে যুক্তি দিয়ে পাশ কাটিয়ে গেছেন—যেমন:

“وَلِلَّهِ ٱلْأَسْمَآءُ ٱلْحُسْنَىٰ فَٱدْعُوهُ بِهَا”
“আল্লাহর জন্যই রয়েছে শ্রেষ্ঠ, অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন লেবেলসমূহ—সুতরাং সেগুলোর মাধ্যমে তাঁকে ডাকো।”

এবং যেসব আয়াত আমরা আগেই আলোচনা করেছি, যেগুলো যথাযথ দুআর আবশ্যকতা ব্যাখ্যা করে—সবগুলোই।

অতএব, আপনি যখন যুক্তিকরণ ও অস্বীকার করেন, তখন ঐ বিষয়গুলোই আপনার ওপর আবশ্যক হয়ে যায়।

প্রায়োগিকভাবে এর মানে কী?

ধরে নিন, আপনার ইদ্দাহ-এর একটি নির্দিষ্ট মাত্রা ছিল—ধরা যাক X।
আপনি এখন আরও বাড়িয়ে ফেললেন।

কেউ হয়তো বলবে:
“ইদ্দাহ বা হিছাবের সময়, আমরা কি তখনই এটা শিখতে পারি না? আল্লাহ তখন কি আমাদের জ্ঞান দিতে পারেন না?”

না।

আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করবেন না।
আল্লাহ আপনাকে ভুলে যাবেন।

তাহলে আপনি কী করবেন?

আমরা দেখব ইনশাআল্লাহ। এটাই হচ্ছে সূরাহ আল-বাকারাহ, আয়াত ১৭৮–১৮৭-এর আলোচনার মূল ভিত্তি।

হ্যাঁ, আমি সময় নিয়ে ব্যাখ্যা করছি—শুধু যাতে আপনি বিষয়টির গুরুত্ব ও ভার বুঝতে পারেন। একবার যখন আপনি এটা অনুধাবন করবেন, তখন ঐ আয়াতগুলো (১৭৮–১৮৭) নিজেই জ্বলে উঠবে সত্যের আলোয়—আর পরিষ্কার করে দিবে যে আমরা যেটা বলছি, সেটাই সঠিক।

যারা নির্দিষ্ট কিছু আয়াতকে যুক্তিকরণ দিয়ে প্রত্যাখ্যান করে, তাদের ইদ্দাহ ও হিছাবের সময় ঐ আয়াত এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তু বাধ্যতামূলক দায়িত্বে পরিণত হয়

كَذَّبۡتُمۡ শব্দে একটি শাদ্দা রয়েছে—এটা গুরুত্বপূর্ণ।
এই শাদ্দা নির্দেশ করে: ইচ্ছাকৃত অস্বীকার, মনগড়া ব্যাখ্যা, জেনে শুনে পাশ কাটানো।

উদাহরণস্বরূপ, আমরা যখন সূরাহ ইউসুফ, আয়াত ১০২ নিয়ে বলি:

“ذَٰلِكَ مِنْ أَنۢبَآءِ ٱلْغَيْبِ”
কেউ বলে: “এর মানে এই যে মুহাম্মদ ﷺ আগে জানতেন না।”তাহলে আপনি যুক্তিকরণ করছেন।
আপনি চাচ্ছেন বাইবেলের বিকৃত ইউসুফ আখ্যান ধার করতে।
এটাই হচ্ছে যুক্তিকরণ।

এবং আল্লাহ কী বলেন?

“فَسَوۡفَ يَكُونُ لِزَامَۢا”এটা তোমার জন্য আবশ্যক হয়ে যাবে।

কল্পনা করুন: আপনি ইউসুফ নাটকের ৩০ পর্ব দেখে ফেলেছেন।
এখন কল্পনা করুন—আপনি হিছাবের মাঝে আছেন, এমন এক নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে, যেখানে:

  • কুরআন আপনার কাছে নেই,

  • চোখ ও কান ব্যবহার করতে পারছেন না,

  • এমনকি মৌলিক শব্দার্থগুলোর ওপরও আপনার সরাসরি দখল নেই।

তাহলে আপনি কীভাবে সূরাহ ইউসুফের জটিল কাঠামো বিশ্লেষণ করবেন?

এটা এমন একটি গভীর ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রক্রিয়া—যেটা এই দুনিয়াতেই শিখে নিতে হয়।

তখন শিখতে গিয়ে সার্থক হওয়া কঠিন—কারণ আপনার জ্ঞানেন্দ্রিয় বন্ধ, কুরআন অনুপস্থিত।

এই জন্যই তারাবীহ গুরুত্বপূর্ণ—শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং চর্চা হিসেবে—যদি তা সঠিকভাবে করা হয়।

সুতরাং হ্যাঁ, হিছাব একটি অত্যন্ত গুরুতর ব্যাপার।

চলুন, আমরা এগিয়ে যাই—দেখতে থাকুন।
হয়তো আপনি শিখে ফেলবেন কিভাবে আপনি আপনার পূর্বপুরুষদের সাহায্য করতে পারেন, যারা এখনও হিছাবের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, এবং এখন আপনার সাহায্যের ভীষণভাবে দরকার

কুরআনিক পরকালীন মডেলের ‘ফ্লোচার্ট’:

বাইবেলের ‘জাহান্নাম’ ও ‘স্বর্গ’ ধারণার চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন!


১. যদি আপনি আল্লাহকে অস্বীকার করেন:
হিজর (একটি কোয়ারেন্টাইন অবস্থা) + বারবার জাহান্নামে প্রবেশ (জীবিত মানুষদের জন্য ক্বারীন হয়ে ওঠা)!


২. যদি আপনি আল্লাহর সাথে শরিক করেন:
হিজর (Quarantine) + বারবার জাহান্নামে পাঠানো (জীবিতদের জন্য ক্বারীন হয়ে যাওয়া)!


৩. যদি আপনি আল্লাহতে বিশ্বাস করেন এবং কুরআনের উপর যথাযথ পরিশ্রম করেন:
ফিরদাউস (পদদলনের অবস্থা থেকে পরিত্রাণ) — পরকালে আপনি আরও শিখতে পারবেন!


৪. যদি আপনি আল্লাহতে বিশ্বাস করেন কিন্তু কুরআন শেখার সুযোগ পাননি:
হিছাব — যার মধ্যে রয়েছে ইদ্দাহ (নূন্যতম শিখনীয় ধারণাসমূহ, যেমন কিভাবে সঠিকভাবে কুরআনিক শব্দভাণ্ডার ব্যবহার করে দুআ করতে হয়)!


৫. যদি আপনি আল্লাহতে বিশ্বাস করেন:
হিছাব (তথা ইদ্দাহ সহ: নূন্যতম ধারণাসমূহ, যার মধ্যে আছে কিভাবে দুআ করতে হয়)। তবে:

আপনি যদি কুরআনের কোনো প্রমাণ বা নীতিকে যুক্তির মাধ্যমে (নিজের কাছে বা অন্যের কাছে) খণ্ডন করেন,
তবে তা আপনার মৃত্যুর পর, হিছাবকালীন আপনার নাফসের জন্য আবশ্যিক শিখনীয় বিষয়ে পরিণত হবে!


৬. যদি আপনি আল্লাহতে বিশ্বাস করেন এবং—
(ক) কুরআনের উপর সক্রিয়ভাবে পরিশ্রম করেছেন,
(খ) শোকর পালন করেছেন,
(গ) কুরআনের কোনো প্রমাণ বা নীতিকে আপনি নিজের বা অন্যের কাছে যুক্তির মাধ্যমে খণ্ডন করেননি:

তাহলে: হিছাব নেই! সরাসরি ফিরদাউস এ প্রবেশ!
আপনি আল্লাহর সান্নিধ্যে নিরাপত্তা ও প্রশান্তি নিয়ে শেখা ও উন্নতি চালিয়ে যেতে পারবেন।

সূরা আল বাকারা থেকে দশটি আয়াত (178-187)

O You who believed! It has been delegated upon you (in the past scripture) to judge, regarding the retribution for the murdered ones, in accordance with the divine scripture:
The free for the free, and the slave for the slave, and the feminine for the feminine,
but whosever anything is absolved by his brother
then let there be (for him an opportunity for) following with understanding in accordance with what is acceptable (in the scripture),
and (let there be for him an opportunity for) delivering to him with insightfulness (from the scripture).
That is a lessening (of the prior impositions upon you) by your lord, and (a potential for) access to the noble visitors.
But for him who commits aggression after that, (let there be) for him is a painful punishment (of separation)1. (2:178)

তোমরা যারা বিশ্বাস এনেছিলে! হত্যাকারীদের উচিত শাস্তির বিষয়ে (পূর্ববর্তী) আসমানী কিতাব অনুসারে বিচার করার দায়িত্ব তোমাদের উপর ন্যস্ত করা হয়েছে:

মুক্তজনের জন্য মুক্তজন, দাসের জন্য দাস, এবং নারীর জন্য নারী,

কিন্তু যদি কারো কোনো কিছু তার ভাইয়ের দ্বারা অব্যাহতি পায়,

তবে তার জন্য (একটি সুযোগ থাকুক) (কিতাবে) যা গ্রহণযোগ্য তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বোঝাপড়ার সাথে অনুসরণ করার,

এবং (তার জন্য একটি সুযোগ থাকুক) (কিতাব থেকে) অন্তর্দৃষ্টির সাথে তাকে  প্রদান করার।

এটা হচ্ছে তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে (পূর্বের আরোপিত বিষয়সমূহের) সহজীকরণ এবং সম্মানিত অতিথিদের প্রবেশাধিকার (এর সম্ভাবনা)।

কিন্তু এর পরে যে বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে (বিচ্ছিন্নতার) বেদনাদায়ক শাস্তি। (2:178)

“মুক্ত মানুষের জন্য মুক্ত মানুষ, দাসের জন্য দাস, আর নারীর জন্য নারী।”

এখানে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল ‘ইব্‌রাহ’—অর্থাৎ শিক্ষা বা গ্রহণযোগ্য বার্তা। আর সেই ইব্‌রাহ কী? সেটি হল এই মূলনীতি: মানুষ যা করে, তাকে ঠিক সেই কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হয়। শাস্তি সেই অপরাধের প্রকৃতি ও মাত্রার সাথেই সঙ্গতিপূর্ণ। এটাই মূল ভিত্তি। ঠিক এই কারণেই আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) এমন বাক্য ব্যবহার করেন—যাতে আমরা বুঝি যে পাপ এবং তার শাস্তির মাঝে এক ধরনের তুল্যতা বা ভারসাম্য রয়েছে। পরিণতি কোন কাকতালীয় বিষয় নয়; বরং তা সেই মূল কর্মের প্রকৃতি ও আকারকেই প্রতিফলিত করে।

And there is for you (from now on), in retribution, (an opportunity for real) life (in the afterlife), O you of the pith, that you may become disciplined (in engaging the scripture). (2:179)

আর প্রতিদানে তোমাদের জন্য রয়েছে (এখন থেকে) একটি (পার্থিব) জীবন (এর সুযোগ পরকালে), হে গভীর চিন্তাশীলগণ, যাতে তোমরা নিয়মানুবর্তি হতে পার (কিতাবের সাথে জড়িত হতে)। (2:179)

প্রতিদানে, সেখানে নিহিত রয়েছে প্রকৃত জীবনের এক সুযোগ—এমনকি পরকালেও। কেন আমি এটা বলছি? কারণ এটি উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন মানুষদের উদ্দেশ্যে—যেন তোমরা কিতাবে সম্পৃক্ততায় নিয়মানুবর্তি হতে পারো।

স্মরণ করুন, আমি বলেছিলাম যে হিছাব কেবল হিসাব-নিকাশ নয়; এটি একটি পুনর্বাসনের ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত।

তাহলে, যখন আপনি হিছাব-এর অবস্থায় থাকবেন—এই “স্থগিত” অবস্থায়—তখন আপনি কি জীবিত? না, আপনি জীবিত নন। আপনি কি মৃত? না, সেটাও না। কুরআনে এমন আয়াত আছে যা এই অবস্থার কথা বলে, আমরা তা ভবিষ্যতে বিশ্লেষণ করব।

তাহলে আপনি তখন কী? আপনি “স্থগিত”—আল্লাহর দ্বারা বিস্মৃত। এবং এমন অবস্থায় কারো জন্য কী সুযোগ থাকে?

আপনি খোঁজ করবেন। আপনি জীবিতদের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে চাইবেন।

এখন আমরা চিন্তা করি: এর মানে কি এই নয় যে আমাদের পূর্বপুরুষদের কেউ, যারা বর্তমানে হিছাব-এর এই স্থগিত অবস্থায় রয়েছেন, তারা আমাদের থেকে শিখতে আসছেন? হ্যাঁ। আমরা এ বিষয়ে আগেও আলোচনা করেছি।

فَنَقَّبُوا فِى ٱلْبِلَٰدِ هَلْ مِن مَّحِيصٍ
“তারা জমিনময় খুঁজেছে—কোনো উপায় আছে কি?”

এর মানে: তারা খুঁজেছে দেহে—অর্থাৎ জীবিতদের মধ্যে।

তারা মুক্তির পথ খুঁজছে। তারা খুঁজছে এমন কাউকে, যে তাদের শিক্ষা দিতে পারে—তবে তারা কথা বলতে পারে না। তাহলে তাদের সুযোগ কী?

যদি কোনো জনগোষ্ঠী থাকে, যারা আন্তরিক প্রচেষ্টায় নিয়োজিত—পরিশ্রম করছে, আলোচনা করছে, কুরআন থেকে যা শিখছে তা বাস্তবায়ন করছে—তাহলে এই স্থগিত পূর্বপুরুষরা, যারা হিছাব-এ রয়েছেন, তারা তাদের কাছ থেকে শিখতে আসে।

আর তারা কাদের থেকে শিখবে? যাদের সাথে পরিচিত—আপনার কাছ থেকে। আপনার পূর্বপুরুষ—তালিকার একেবারে উপরের দিকে।

তাহলে এই হিছাবের অবস্থা আসলে একটি কিসাসের রূপ। আমরা এটা আরও বিশ্লেষণ করব। হিসাবে স্থগিত হওয়া হলো এক প্রকার কিসাস: এটি চূড়ান্ত শাস্তি নয়, নয় স্থায়ী প্রতিশোধ—বরং একধরনের জীবন অর্জনের সুযোগ।

এ প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হতে পারে। আপনি যদি সৌভাগ্যবান হন, এবং আপনার ন্যায়পরায়ণ বংশধর থাকে, তারা হয়তো আপনাকে সহজেই এই জ্ঞান পৌঁছে দিতে পারবে। কিন্তু নিজের জীবদ্দশাতেই এই জ্ঞান অর্জন করা কি ভালো নয়? অবশ্যই ভালো।

এই পুরো ধারণার উদ্দেশ্যই এটি:
যেন তোমরা কুরআনের সঙ্গে সম্পৃক্ততায় আপনি হতে পারো।

It has been delegated upon you in accordance with the divine scripture, when one of you recognizes the nearness of (or inevitability) of physical death, if he leaves behind a good understanding, (to pass on) the heritage2 for the benefit of (or against) the birth parents and the relatives3, in accordance with what is acceptable (from the scripture): (This is) An obligation upon the disciplined (in engaging the scripture) ones. (2:180)

এটি তোমাদের উপর অর্পিত হয়েছে—আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী—যখন তোমাদের কেউ শারীরিক মৃত্যুর নিকটবর্তী হওয়া (অথবা তার অনিবার্যতা) উপলব্ধি করে, যদি সে একটি সঠিক অনুধাবন রাখে, (তাহলে তা হস্তান্তর করতে হবে) ঐতিহ্য হিসেবে—পিতামাতা ও নিকট আত্মীয়দের কল্যাণে (বা তাদের বিরুদ্ধে), (কিতাব থেকে) যা গ্রহণযোগ্য তার ভিত্তিতে:
এটি একটি বাধ্যতামূলক দায়িত্ব — তাদের জন্য যারা কিতাবের সাথে নিয়মানুবর্তিভাবে সম্পৃক্ত থাকে। (2:180)

আপনার মধ্যে যদি কেউ শারীরিক মৃত্যুর নিকটতা বা অনিবার্যতা অনুভব করেন—অর্থাৎ আপনি যদি অনুভব করেন যে মৃত্যু ঘনিয়ে এসেছে—এমন অবস্থায় যদি আপনি কিছু কল্যাণকর কিছু রেখে যান, তরাকা খাইরান আল-ওয়াসিয়্যাহ, অর্থাৎ আপনি যদি কোনো উত্তম অনুধাবন রেখে যান, তাহলে এর মানে কী?

এর মানে হলো: আপনার কাছে প্রমাণ-ভিত্তিক জ্ঞান, উপলব্ধি ও বোঝাপড়া রয়েছে—যা আপনি এখনো প্রকাশ করেননি। সুতরাং নির্দেশনা স্পষ্ট: মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করবেন না। তার আগেই আপনাকে পদক্ষেপ নিতে হবে। আর এই পদক্ষেপটির নাম আল-ওয়াসিয়্যাহ—একটি সুপারিশ বা নির্দেশনা।

আপনি কী করবেন? অবশ্যই, অন্যদের শিক্ষা দিবেন। কিন্তু তার পাশাপাশি, আপনাকে একটি ওয়াসিয়্যাহ দিতে হবে—একটি সুস্পষ্ট পরামর্শ বা নির্দেশনা।

এখানে এটা বোঝানো হচ্ছে না যে ওয়াসিয়্যাহ মানে কেবল সম্পদ বা সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি উইল। যদিও অনেক সময় এটিকে এভাবেই ব্যাখ্যা করা হয়, কুরআনে ওয়াসসা, ওয়াসা, বা ওয়াসিয়্যাহ শব্দগুলো অনেক ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ব্যবহৃত হয়েছে।

এখানে আমি ওয়াসিয়্যাহ শব্দটি অনুবাদ করছি “ঐতিহ্য” হিসেবে।

এই ঐতিহ্য হতে পারে বৌদ্ধিক—জ্ঞান, অন্তর্দৃষ্টি—বা এমনকি সম্পদও হতে পারে। যেকোনো কিছুকেই ঐতিহ্য বলা যায়, আর এটা ইংরেজি “heritage” শব্দের মূল অর্থের সাথেও মিলে যায়—যেটা কেবল উত্তরাধিকার নয়।

সুতরাং আপনি যে কোনো রকমের ঐতিহ্য রেখে যাবেন, তাতে একটি সুপারিশ থাকতে হবে—একটি ওয়াসিয়্যাহ—আপনার জন্মদাতা পিতা-মাতা ও আত্মীয়স্বজনদের পক্ষ থেকে বা সম্পর্কে।

এর অর্থ কী?

আল্লাহ ﷻ বলছেন: যখন সময় ঘনিয়ে আসে, তখন আপনি যাদের রেখে যাচ্ছেন, তাদের উপদেশ দিন। আপনি, একজন মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তি—সম্ভবত একজন পিতা বা মাতা—আপনার সন্তানদের, ভাতিজা-ভাতিজিদের, বা ভাই-বোনদের উদ্দেশে বলছেন: তোমরা যেন তোমাদের জন্মদাতা পিতা-মাতা ও আত্মীয়দের ভুলে না যাও।

এখন চিন্তা করুন এর গভীরতা: আপনি যেন বলছেন, “তোমরা যদি ভবিষ্যতে কোনো কল্যাণকর জ্ঞান বা উপলব্ধি পাও, তাহলে আমাকে তার সুফল থেকে বঞ্চিত কোরো না।”
এই খাইর বলতে বোঝানো হচ্ছে চলমান জ্ঞান, অন্তর্দৃষ্টি, কিংবা এমন কাজ—যেগুলো আপনার মৃত্যু পরবর্তী অবস্থায়ও উপকারে আসতে পারে। আমরা পরে এই বিষয়টি আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

আগে যে বিল-মা‘রূফ শব্দটি আমরা অপরাধী বা হত্যাকারীর প্রসঙ্গে দেখেছি—সেখানে যেমন স্বীকৃত ভালোর ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত দেয়ার কথা ছিল—এখানেও ঠিক সেটাই প্রযোজ্য।

এখানে বলা হচ্ছে:

حَقًّا عَلَى ٱلْمُتَّقِينَ — “এটি একটি বাধ্যতামূলক দায়িত্ব — তাদের জন্য যারা কিতাবের সাথে নিয়মানুবর্তিভাবে সম্পৃক্ত থাকে।”

অর্থাৎ, এই কাজ—আপনার ওয়াসিয়্যাহ, আপনার জ্ঞানভিত্তিক ঐতিহ্য ও দিকনির্দেশনা—এটি একটি কর্তব্য।

আর খেয়াল করুন: এই আয়াতটি আর “يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟”—”হে ঈমানদারগণ”—এই সম্বোধনে নয়। আগের আয়াতটি ছিল ঐভাবে, কিন্তু এখন এই আয়াতটি সরাসরি আপনাকে উদ্দেশ করে বলা হয়েছে—এটি একটি স্পষ্ট আদেশ।

আল্লাহ ﷻ বলছেন: “আপনি যদি কোনো উপকারী জ্ঞান বা উপলব্ধি রেখে যান, তাহলে যাদের আপনি রেখে যাচ্ছেন, তাদের সে বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দিন।”

কেন?

কারণ তারা সেই অনুধাবনকে আরও বিকশিত করতে পারে। তারা সেটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এবং তাদের উচিত—আপনাকে স্মরণ করা—তাদের গবেষণায়, জ্ঞানচর্চার বৈঠকে, ভবিষ্যৎ অনুসন্ধানে। কেন?

কারণ আপনারও সেই কল্যাণের প্রয়োজন হবে।

আশা করি, আপনি এখন বুঝতে পারছেন—সবকিছু কিভাবে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত, কিভাবে এটা একটি পূর্ণাঙ্গ চক্রের মতো কাজ করছে।

আমরা ইনশাআল্লাহ্‌ অচিরেই আরও বিশ্লেষণে প্রবেশ করব।

And then, whoever alters it (i.e., the heritage) after he has heard it, then the sin (of altering it) is only upon those who have altered it. Indeed, Allah is the provider of hearing4, the exposer of evidence-based knowledge. (2:181)

এবং তারপর যদি যে কেউ তা (অর্থাৎ ঐ ঐতিহ্য) শোনার পর তা পরিবর্তন করে, তবে (এই পরিবর্তনের) পাপ কেবল তাদের উপরই বর্তাবে যারা তা পরিবর্তন করেছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণদাতা, প্রমাণভিত্তিক জ্ঞান প্রকাশকারী। (2:181)

আল্লাহ ﷻ এখানে আপনাকে—যিনি মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছেন—সম্বোধন করছেন। “ḥaḍara aḥadakumu al-mawt”—যখন আপনাদের কারও মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয়। তিনি বলছেন: আপনি চিন্তা করবেন না, আপনার রেখে যাওয়া ঐতিহ্য বা পরামর্শ ভবিষ্যতে কেউ পরিবর্তন করবে কি না—তা নিয়ে আপনার দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই।

আল্লাহ ﷻ নিজেই তা সামলাবেন।

যদি আপনার রেখে যাওয়া ঐতিহ্য—তা হোক জ্ঞান, অন্তর্দৃষ্টি, বা কোন সুপারিশ—পরবর্তীতে কেউ বিকৃত বা পরিবর্তন করে দেয়, তাহলেও সেটার পাপ আপনার ওপর নয়।

আল্লাহ ﷻ বলেন:

“fa-innamā ithmuhu ʿala alladhīna yubaddilūnah”—
“তবে, এর পাপ কেবল তাদের ওপরই বর্তাবে, যারা এটিকে বিকৃত করেছে।”

“inna Allāha samīʿun ʿalīm”—
“নিশ্চয়ই আল্লাহই শ্রবণদাতা, প্রমাণভিত্তিক জ্ঞান প্রকাশকারী।”

আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন, এখানে বিশেষভাবে “samīʿun ʿalīm” ব্যবহার করা হয়েছে। কেন?

অর্থাৎ, যদি আপনার পরবর্তী বংশধররা—যদিও আপনার ওয়াসিয়্যাহ বা ঐতিহ্য বিকৃত হয়ে থাকে—সত্য-অন্বেষী হয়ে দুআ করে, আল্লাহ ﷻ তাদের সঠিক পথনির্দেশনা দেবেন।

আসুন, আবার বলি—এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ধরে নিন, প্রিয় মুহাম্মদ ﷺ-এর কোনো বক্তব্য পরবর্তীকালে বিকৃত হয়ে গেছে, বা তার মূল ধারণা হারিয়ে গেছে।

তবুও, আল্লাহ ﷻ সেই মূল ধারণা হারাননি।

এবং যদি কেউ—হোক সে ১৪০০ বছর পরের মানুষ—সত্যিকারের অনুরাগ ও দুআর মাধ্যমে সেই ধারণা খুঁজে ফেরে, আল্লাহ ﷻ তাকে তা জানিয়ে দেবেন।

আপনি বুঝতে পারছেন তো?

আল্লাহ ﷻ আমাদের প্রিয় মুহাম্মদ ﷺ বা সাহাবিদের উপর এই দায় চাপাননি যে সবকিছু হুবহু সংরক্ষিত থাকবে—আকারে বা ভাষায়। যাঁরা পরবর্তীতে বিকৃতি ঘটিয়েছেন, দায়ভার তাঁদের উপর।

আর আল্লাহ ﷻ হচ্ছেন samīʿun ʿalīm—তিনি আমাদের আন্তরিক অন্বেষণ শুনেন, আর আমাদের সামনে সেই সত্যিকারের, প্রমাণ-ভিত্তিক জ্ঞান উন্মোচন করে দেন।

এটি এক অপূর্ব ধারণা—একটি আধ্যাত্মিক সংযোগ, সময় ও যুগ অতিক্রম করে, এমনকি ১৪০০ বছর পরেও।

But whoever fears from someone leaving a heritage (in which there is) some injustice or sin (polluting his heritage), but then he corrects it (afterwards) among them (among those who receive the injustice or sin), then against him there is no sin. Indeed, Allahh is amenable to reconnect (with him), merciful. (2:182)

কিন্তু যদি যে কেউ আশঙ্কা করে, কেউ একটি ঐতিহ্য রেখে যাচ্ছে যা থেকে কিছু অন্যায় বা পাপ (তার ঐতিহ্যকে) কলুষিত করছে, এবং তারপর সে (পরবর্তীতে) এটি তাদের মধ্যে সংশোধন করে, তবে তার বিরুদ্ধে কোনো পাপ নেই। নিশ্চয়ই, আল্লাহ (তাঁর সাথে) পুনঃসংযোগে সহায়ক, করুণাময়। (2:182)

সুতরাং, আপনি যদি একজন সন্তান হন—পুত্র বা কন্যা—যিনি তাঁর পিতা-মাতা বা এমনকি দাদা-দাদীর কথা শুনছেন, আর তারা আপনার জন্য একটি বিকৃত বা ত্রুটিপূর্ণ ঐতিহ্য রেখে গেছেনতাহলে আপনি কী করবেন?

যদি সেই ঐতিহ্যে এমন কিছু থাকে যা একটি ইথম—একটি পাপ—, যেমন তাদের দোয়ার পদ্ধতিতে, বিশ্বাস গঠনের চিন্তাধারায়, অথবা “ayyāman maʿdūdāt”, “Allāhumma” প্রভৃতি কথায়, যা গভীরভাবে ভুল বা ভুল জায়গায় বসানো হয়েছে, আর আপনি বুঝে যান যে এগুলো ঐ ঐতিহ্যকে দূষিত করছে—তাহলে আপনি কী করবেন?

যেমন আছে, তেমনই গ্রহণ করবেন না।
অন্ধভাবে গিলে ফেলবেন না।
সংশোধন করুন।
মেরামত করুন।

আর কুরআন বলছে:

فَأَصْلَحَ بَيْنَهُمْ
“অতঃপর তিনি তাদের মাঝে সংশোধন করে দেন।”

এখন, এই বাক্যটির দিকে গভীর মনোযোগ দিন: “তাদের মাঝে”—baynahum।

এখানে ‘তাদের’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে?

এটি অন্তর্ভুক্ত করে:

  • আপনার পিতা-মাতা;

  • আপনার রক্তসম্পর্কীয় ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা;

  • এবং, বিশেষভাবে, সেই মৃত ব্যক্তিকে
    যিনি এই ত্রুটিপূর্ণ বা দূষিত ঐতিহ্য রেখে গেছেনমুওসী।

অর্থাৎ, যিনি এই জ্ঞান আপনার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন—যদিও ত্রুটিপূর্ণ—তিনিও “তাদের” অন্তর্ভুক্ত। কেন?

কারণ তার কাজ শেষ হয়নি।
তিনি হিছাবের পথে—অগ্রসর হচ্ছেন, কারণ তার আক্বীদাহ্, বিশ্বাসব্যবস্থা, দোয়া কিংবা শিক্ষা দূষিত ছিল।
এবং সেই দূষণ দূর না হওয়া পর্যন্ত তিনি এগোতে পারবেন না।

এবং কে এই সংশোধনের দায়িত্বে?

আপনি।

আপনিই তাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ—রক্তেও এবং আত্মিক বন্ধনেও।
আপনার উপর দায়িত্ব রয়েছে, সঠিক জ্ঞান—‘ইউসর’, সহজে পৌঁছানো সত্য—আপনার পরিবার ও পূর্বপুরুষদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার।

অতএব, যখন আপনি ঐতিহ্য পরিশুদ্ধ করার কাজে নিয়োজিত হন—ভুলগুলো দূর করেন এবং হস্তান্তরিত বিশ্বাস ও জ্ঞানের সত্যতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন—তখন আপনি তা শুধু নিজের জন্য করছেন না।

আপনি সাহায্য করছেন আপনার পিতা-মাতা, আপনার দাদা-দাদী, এমনকি সেই পূর্বপুরুষদের যারা অনেক আগেই দুনিয়া ছেড়ে গেছেন।
তারা হয়তো আন্তরিকতার সঙ্গে আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন, কিন্তু এখন তারা মরিয়া হয়ে উঠেছেন সঠিক পথ শিখতে।

তারা যে স্থগিতাবস্থায় আছেন, তা থেকে মুক্তি পাবেন না যতক্ষণ না তারা শিখতে পারেন।
আর তারা কার কাছ থেকে শিখবেন?
আপনার কাছ থেকে।

এখন যদি তারা সেই স্থগিতাবস্থায় আপনার কাছে আসে, আর আপনি যদি সঠিক জ্ঞান না রাখেন—তাহলে কী হবে?

তারা নিরাশ হয়ে ফিরে যাবেন, ঘুরে বেড়াবেন, খুঁজবেন, তবুও বঞ্চিত থাকবেন।

আপনি কি এখন উপলব্ধি করতে পারছেন, এই দায়িত্ব কতটা গভীর, কতটা আত্মিকভাবে ভারবাহী?

পবিত্র কুরআন আরও বলে:

فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ
“তাহলে তার ওপর কোনো পাপ নেই”—
যিনি সংশোধন করেন, তার ওপর।

আল্লাহ্ কেন এমন বললেন?

কারণ তিনি غَفُورٌ رَحِيمٌ—ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।

কিন্তু তিনি কাকে এই রহমত দিচ্ছেন?

‘তাদের’ মধ্যে সেই ব্যক্তিকে—baynahum—যিনি ভুল করেছিলেন।
যিনি বিকৃত ঐতিহ্য রেখে গিয়েছিলেন।

অর্থাৎ, আপনি যখন উদ্যোগ নিয়ে সেই ত্রুটিপূর্ণ হস্তান্তর সংশোধন করেন, তখন আল্লাহ্‌র রহমত ফিরে গিয়ে পৌঁছে যায়—তাদের কাছেও যারা অজান্তেই ভুল করেছিল।

সারাংশ কী?

এই আয়াতে রয়েছে একটি গভীর, হৃদয়ছোঁয়া শিক্ষা।

ঐতিহ্যসূত্রে প্রাপ্ত ভুল সংশোধন শুধু আপনার নিজের উপকারে নয়।
যেমন আমি অনেকবার MQ Live-এ বলেছি: এই উপকার পৌঁছে যায় আপনার পূর্বপুরুষদের কাছেও।

যারা কখনো অজান্তে ভুল করেছিলেন—এখন তারা শিখতে চাচ্ছেন।
কিন্তু আপনাকে সেই জ্ঞান এমন ভাষায়, এমন উপস্থাপনায় দিতে হবে যা তারা বুঝতে পারেন।
তাহলেই তারা সেই রশি ধরতে পারবেন, আঁকড়ে ধরতে পারবেন, আর ধীরে ধীরে সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন।

১৪০০ বছর পরেও কি তা সম্ভব?
হ্যাঁ—তাদের মধ্যে কেউ কেউ এখনো এই অপেক্ষায়।

১০,০০০ বছর পরেও?
হ্যাঁ—যদি তারা এখনো কাউকে না পেয়ে থাকেন, যিনি সত্য পথ শেখাতে পারেন।

মনে রাখবেন: তারা কথা বলতে পারে না, তারা অনুভব করতে পারে না,
তারা অন্ধকারে অনুসন্ধান করছেন।

যদি তারা কাউকে না পান যিনি তাদের পথ দেখাতে পারেন, তাহলে তারা সেই স্থগিতাবস্থাতেই রয়ে যান।

সেই অবস্থায় কী ঘটে?

তাদের জন্য কোনো আহার নেই—না কোনো খাবার, না কোনো পুষ্টি।
তাদের জন্য কোনো পানীয় নেই—যা তাদের আত্মিক পিপাসা মেটাতে পারে।

তাহলে এখন, আপনি বুঝতে পারছেন রোযার ধারণাটি কোথায় যাচ্ছে।

O You who believed! Those who are in a state of fasting (“Şiyām’ in their afterlife) have been delegated upon you for you to judge (and correct them), in accordance with the divine scripture, like it was ordained upon those before you (who are mentioned in Aya 2:180). (We remind you) Perchance you attain to be disciplined (against)… (2:183)

তোমরা যারা বিশ্বাস এনেছ! যারা (তাদের পরকালে সিয়াম) রোযা অবস্থায় তাদের উপর তোমাদের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে যে, তোমরা আসমানি কিতাব অনুসারে বিচার করবে (এবং তাদের সংশোধন করবে), যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর নির্ধারিত হয়েছিল (যাদের আয়া 2:180 এ উল্লেখ করা হয়েছে)। (আমরা তোমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছি) তোমরা হয়তো নিয়মানুবর্তি হতে পারো (তাদের বিরুদ্ধে)… (2:183)

সিয়াম (Ṣiyām) এমন একদল সত্তাকে বোঝায়—যারা তৃষ্ণার্ত, উপবাসরত, এবং চরম হতাশার মধ্যে রয়েছে—
তারা প্রবল উত্তাপ, গভীর উদ্বেগ, এবং এক নিবিড় আকাঙ্ক্ষায় ছটফট করছে—এই স্থগিত অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে এবং ফিরদাউস—স্বর্গে—পৌঁছাতে।

এই আলোকে, সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২:১৮৩ থেকে ২:১৮৭-এ যেভাবে সিয়াম শব্দটি এসেছে, তা কেবল একক, বিমূর্ত, অসীম ধাতুরূপ বা শারীরিক উপবাসের একটি সাধারণ মাসদার (ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য) হিসেবে বোঝা যাবে না।

বরং, এটি একটি বহুবচন রূপ হিসেবে কাজ করছে—আরবি ভাষায় কিছু সমষ্টিগত বিশেষ্য (collective noun)-এর মতো, যেমন:

  • কিয়াম (যারা দাঁড়ায় বা উঠে দাঁড়ায়),

  • কিরাম (মর্যাদাবানরা),

  • ইযাম (মহান সত্তারা),

এই প্রতিটি শব্দ একটি সত্তা-গোষ্ঠী বা সত্তার শ্রেণিকে নির্দেশ করে। অনুরূপভাবে, সিয়াম বোঝায় নুফূস (আত্মা)-এর একটি উপশ্রেণী, যারা মৃত্যুর পর এক ধরনের স্থগিত অবস্থায় রয়েছে এবং নিজেদের বিচার ও পুনর্গঠনের প্রতীক্ষায় রয়েছে।

এই ব্যাখ্যা আরও স্পষ্ট হয় যখন আমরা কুরআনের বাক্যাংশটি পর্যালোচনা করি:
كُتِبَ عَلَيْكُمْ (kutiba ʿalaykum)—
এই বাক্যাংশটি বিভিন্ন আয়াতে পুনরাবৃত্তি হয়েছে, এবং এর শব্দার্থিক ক্ষেত্র (semantic field) একটি অত্যন্ত গভীর তাৎপর্য প্রকাশ করে।

এটি কেবল “তোমাদের উপর নির্ধারন করা হয়েছে”—এই প্রচলিত অনুবাদে সীমাবদ্ধ নয়।

বরং, যখন আমরা এর ব্যবহারগুলো অনুসরণ করি, তখন দেখতে পাই—একটি নিরবিচ্ছিন্ন থিম আবির্ভূত হয়:
দায়িত্ব অর্পণ, প্রতিনিধিত্ব, এবং নৈতিক ভার

অর্থাৎ:
“তোমাদের উপর দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে—
যাতে তোমরা বিচার করো,
এবং/অথবা ভুলপথে থাকাদের সংশোধন করো।”

একটি শক্তিশালী উদাহরণ আমরা পাই হত্যা ও ন্যায়বিচার সংক্রান্ত আয়াতে— সেখানে আল্লাহ ﷻ আমাদের শিক্ষা দেন যে,
সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ—হত্যা—এর মুখোমুখি হলেও,
উচ্চতর পথটি হলো মৃত্যু দিয়ে প্রতিশোধ নেওয়া নয়,
বরং এমনভাবে বিচার করা,
যা খুনিকে পুনর্গঠনের একটি পথ উন্মুক্ত করে।

“কুতিবা আলাইকম”-এর মূল তাৎপর্য এটাই:

এটি জীবিতদের উপর একটি রূপান্তরমূলক ভার অর্পণ—
যেন তারা আধ্যাত্মিকভাবে স্থগিত অবস্থায় থাকা আত্মাদের
সংশোধনের গতিপথে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করতে পারে।

এটি এক অবাক করা রকমের সৌন্দর্যময় ধারণা—
এবং এটি সিয়াম সংক্রান্ত আয়াতসমূহের অর্থকে সম্পূর্ণ নতুনভাবে চিত্রিত করে।

আসলে, আমরা যখন খেয়াল করি প্রথম কয়েকটি আয়াতের সঙ্গে (যেখানে হত্যা, সংশোধন এবং বিচার নিয়ে আলোচনা হয়েছে), এবং রমাদান সংক্রান্ত সিয়াম আয়াতসমূহের মধ্যে, তখন এই দুইয়ের মধ্যে অসাধারণ মিল দেখতে পাই—
ভাষাগত কাঠামোতে তারা প্রায় অভিন্ন, এবং ধারণাগতভাবে পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত।

তাই প্রশ্ন আসেই:

এই সিয়াম সংক্রান্ত আয়াতসমূহ কি সত্যিই কেবল খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত থাকার শরীরগত অনুশীলন নিয়ে?

না কি এর ভিতরে লুকিয়ে আছে এক আরও গভীর বার্তা?

চলুন, পরবর্তী আয়াতে এগিয়ে যাই, এবং আরও অনুসন্ধান করি।

(Those who claim that punishment in the afterlife is limited to) A few ‘Ayyam’ (days)!

And whosoever among you is ‘sick” (i.e., afflicted with sickness in their core) or is upon a ‘Safar’ (an older, corrupted tome) – then imposed upon them is a number, to make up

– (and they are but) others (like the above ‘Ayyam’) among ‘Ayyam’.

And upon those who cannot bear it (or can enable someone else to do what is next) a compensation: “Food” (i.e., using the correct divine lexicon) of the type sought by whoever seeks Sakinah’ (ie., someone who is desperate to find tranquility by learning the proper understanding-even if that someone is in a state of ‘Şiyām’ in his afterlife).

And whoever volunteers (to teach or enable someone else to teach) good understanding, then this shall constitute a better understanding of Allahh’s commands for him.

And (also delegated upon you is) that not to ‘fast’ (in the afterlife) is better for you if you have evidence-based knowledge… (2:184)

…(যারা দাবি করে যে পরকালে শাস্তি সীমাবদ্ধ) কয়েকটি ‘আইয়াম’ (দিন) এ!

আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ ‘অসুস্থ’ (অর্থাৎ, তাদের অন্তর অসুস্থতায় ভুগছে) বা ‘সফর’ (পুরানো, দূষিত গ্রন্থ)-এর উপর – তাহলে তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় একটি সংখ্যা, পূরণ করতে

– (এবং তারা) অন্যান্য (উপরের ‘আইয়াম’ এর মতোই) ‘আইয়াম’ এর মাঝে।

আর তাদের উপর– যারা এটি বহন করতে পারে না (অথবা অন্য কাউকে পরবর্তী করণীয় সম্পাদনে সক্ষম করতে পারে)– একটি ক্ষতিপূরণ: “খাদ্য” (সঠিক আসমানি শব্দভাণ্ডার ব্যবহার করে) এমন ধরণের যা দ্বারা কেউ ‘সাকিনাহ’ অনুসন্ধান করে (অর্থাৎ, এমন কেউ যে সঠিক উপলব্ধি শিখে প্রশান্তি পেতে মরিয়া – এমনকি যদি সেই ব্যক্তি তার পরবর্তী জীবনে ‘সিয়াম’ অবস্থায়ও থাকে)।

এবং যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় (শিক্ষা দিতে অথবা অন্য কাউকে শিক্ষা দেওয়ার সামর্থ্য করে দিতে) ভাল বোঝাপড়া প্রদান করে, তবে এটি তার জন্য আল্লাহর নির্দেশাবলী সম্পর্কে আরও ভাল বোঝাপড়া গঠন করবে।

আর (তোমাদের উপর এটাও অর্পণ করা হয়েছে) যে, (পরকালে) ‘রোযা’ অবস্থায় না থাকা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমাদের প্রমাণভিত্তিক জ্ঞান থাকে… (2:184)

আল্লাহ্‌ ﷻ আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন: আপনাকে একটি দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে—একটি কাজ সোপর্দ করা হয়েছে। এই কাজ কেবল ক্ষুধা ও তৃষ্ণার কষ্ট সহ্য করার বিষয় নয়। বরং এটি একেকটি মাইলফলক অর্জনের বিষয়, এমন কিছু দক্ষতা অর্জনের বিষয়, যার মাধ্যমে আপনি আত্মিক পরিপক্বতা ও বিকাশের প্রতীকী “ব্যাজ” অর্জন করেন। আপনাকে সাহায্য করতে হবে আস-সিয়ামকে—যারা একটি স্থগিত অবস্থায় আছে, আত্মিকভাবে থেমে আছে, একপ্রকার অপেক্ষায় আছে।

এটি একটি অত্যন্ত গভীর আত্মিক ও জ্ঞানতাত্ত্বিক (epistemic) ধারণা। এবং, গুরুত্বপূর্ণভাবে, কুরআনের সব ভাষাগত গঠনই এই ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে।

“তোমাদের মধ্যে যারা অসুস্থ অথবা সফরে…”
(সূরা আল-বাকারা ২:১৮৪)
فَمَن كَانَ مِنكُم مَرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ

আসুন একটু বিশ্লেষণ করি:

مَرِيضًا – “অসুস্থ”
কুরআনে এই শব্দটি কেবল শারীরিক অসুস্থতার জন্য ব্যবহৃত হয়নি। যেমন অন্য এক আয়াতে বলা হয়েছে:
“فِي قُلُوبِهِم مَرَضٌ فَزَادَهُمُ ٱللَّهُ مَرَضًا” – “তাদের হৃদয়ে রোগ রয়েছে, ফলে আল্লাহ তাদের রোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন।” (২:১০)

অতএব, এখানেও “অসুস্থ” বলতে কেবল শারীরিক নয়, বরং আত্মিক বা জ্ঞানগত অসুস্থতা বোঝানো হতে পারে—যেমন চিন্তাগত বিভ্রান্তি, সংশয়, মুনাফিকি বা মতাদর্শগত বিকৃতি।

عَلَىٰ سَفَرٍ – “সফরে”
সাধারণভাবে একে ভ্রমণ বলা হয়, কিন্তু ভাষাগত দিক থেকে “সফর” (سفر) এমন একটি পুরাতন, বিকৃত গ্রন্থকেও বোঝায়—যার বহুবচন হলো “আসফার” (أَسْفَار)। যেমন:

“যারা তাওরাত বহন করার দায়িত্ব পেয়েও তা পালন করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত হলো সেই গাধার মতো, যে বহু কিতাবের বোঝা বহন করে।” (সূরা আল-জুমু‘আ ৬২:৫)

সুতরাং, এখানে “সফর” বলতে বোঝানো হতে পারে: যে ব্যক্তি পুরাতন বিকৃত বিধান, মানুষ-নির্মিত প্রথা বা পূর্ববর্তী বিকৃত ধর্মগ্রন্থ আঁকড়ে ধরেছে।

সুতরাং, এই আয়াতকে এমনভাবে বোঝা যেতে পারে:

“তোমাদের মধ্যে যারা আত্মিকভাবে অসুস্থ, অথবা যারা পুরাতন বিকৃত পদ্ধতিতে স্থির রয়েছে, তাদের জন্য নির্ধারিত সংখ্যক অন্যান্য ‘আয়্যাম’ (দিন/মাইলফলক) পূরণ করতে হবে, যেগুলো ইতিপূর্বে আলোচনা হয়েছে।”

এই “অন্যান্য আয়্যাম” কেবল ক্যালেন্ডারের দিন নয়। এগুলো আত্মিক ধাপ, চেতনার জাগরণ বা অস্তিত্বগত উপলব্ধির মুহূর্ত।


فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ – “একজন মিসকীনের জন্য খাদ্যরূপী মুক্তিপণ”
(সূরা আল-বাকারা ২:১৮৪ এর ধারাবাহিকতা)

وَعَلَى ٱلَّذِينَ يُطِيقُونَهُۥ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ

সাধারণ অনুবাদে বলা হয়: “যারা রোযা রাখতে অক্ষম, তারা যেন একজন দরিদ্রকে খাওয়ায়।” কিন্তু এখানে লক্ষ্য করুন:

আয়াতে বলা হয়েছে طَعَامُ (ṭaʿām), إِطْعَام (iṭʿām) নয়।

  • ṭaʿām = খাদ্য (নামবাচক)

  • iṭʿām = খাওয়ানো (ক্রিয়াবাচক)

অতএব, কুরআন এখানে খাওয়াতে বলেনি—বরং খাদ্য প্রদানের বিষয় বলেছে, এবং তা আত্মিক খাদ্যের ইঙ্গিত দেয়।

মিসকীন কে?
শুধু অর্থনৈতিকভাবে দরিদ্র নয়, বরং আত্মিকভাবে বিপর্যস্ত, যিনি সাকীনা (শান্তি, নিশ্চিততা) কামনা করেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে, মিসকীন হলেন সেই আস-সিয়াম, যারা আখিরাতে স্থগিত অবস্থায় রয়েছে—হিসাবের অপেক্ষায়, পরিস্কার বোঝাপড়ার অপেক্ষায়।

তাদের Ṭaʿām কী?
এটি হচ্ছে বোঝাপড়া—আল্লাহর পক্ষ থেকে সঠিক জ্ঞান, যা যারা জানে তারা শিক্ষা দেয়।

সুতরাং, এখানে ফিদিয়া মানে খাদ্যদানের কাজ নয়, বরং:

  • আত্মিক পুষ্টি প্রদান

  • অর্থবোধ প্রচার

  • স্থগিত আত্মাদের জ্ঞানগত সহায়তা


فَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَهُوَ خَيْرٌ لَّهُ – “যে স্বেচ্ছায় কিছু করে, তা তার জন্য কল্যাণকর”
যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় শেখায়, বা অন্য কাউকে শেখাতে সহায়তা করে, বা নিজের পরিবার ও সমাজে বোঝাপড়া প্রচার করে—আল্লাহর দৃষ্টিতে সেটাই উত্তম।
এমনকি যদি আপনার নিজের কোনো আত্মীয় না থাকে যারা হিসাবের জন্য অপেক্ষমাণ, এই স্বেচ্ছাশ্রম আপনার অবস্থানকে উন্নীত করবে।


وَأَن تَصُومُواْ خَيْرٞ لَّكُمۡ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ – “আর যদি তোমরা রোযা রাখো, তবে তা তোমাদের জন্য উত্তম—যদি তোমরা জানো।”
(সূরা আল-বাকারা ২:১৮৪ এর শেষাংশ)

এই অংশে দুটি ব্যাকরণগত সম্ভাবনা আছে:

أن تَصُومُوا এর অর্থ হতে পারে:

  1. “যে তোমরা রোযা রাখো”

  2. অথবা, কিছু নির্দিষ্ট ব্যাকরণিক প্রেক্ষাপটে এর ভিন্ন ইঙ্গিত—যেমন “তোমরা রোযা না রাখো” 

অতএব, এর তাৎপর্য এমনও হতে পারে:

  • আখিরাতে, তোমাদের জন্য উত্তম—রোযার অবস্থায় না থাকা, অর্থাৎ স্থগিত না থাকা।

  • দুনিয়াতে, রোযা রাখা উত্তম—যদি তোমরা তার আত্মিক গভীরতা বোঝো—কারণ এটি তোমাদেরকে পরে স্থগিত হওয়ার অবস্থা থেকে রক্ষা করে।

(Continuing from the previous Āya, if you have evidence-based knowledge about) The declaration about ‘Ramaḍān’ (the excessively thirsty one after an extended drought) for which the QurꜤān has been made accessible to clarify, as guidance to people and instruments of deduction from the guidance, and (to clarify) the application of the criterion for distinguishing (between the various categories mentioned in this paragraph).

And thus, whoever witnesses the declaration (described above, in Āya 2:183-184), let him fast it.

And whosoever among you is ‘sick ’ (i.e., afflicted with sickness in their core) or is upon a ‘Safar’ (an older, corrupted tome) – then imposed upon them is a number, to make up

– (and they are but) others (like the above ‘Ayyām’) among ‘Ayyām’.

Allahh intends through you ease of cognition

and does not intend for you hardship, and for you to complete the quantity,

and (he intends for you) to declare Allahh’s guidance to be superior, in recognition for that (to) which he has guided you,

and perchance you are communicating with Allahh. (2:185)

… ‘রমাদান’ (অর্থাৎ, দীর্ঘ খরার পর প্রবল তৃষ্ণার্ত সেই সত্তা) সম্পর্কিত ঘোষণাটি— যার জন্য কোরআনকে প্রবেশযোগ্য করা হয়েছে, মানুষের জন্য দিকনির্দেশনা হিসেবে, এবং সেই দিকনির্দেশনা থেকে যুক্তিনির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপকরণ হিসেবে, এবং (স্পষ্ট করার জন্য) মানদণ্ডের প্রয়োগ—যার মাধ্যমে (এই অনুচ্ছেদে উল্লিখিত বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে) পার্থক্য নির্ধারণ করা যায়।

অতএব, কেউ যদি সেই ঘোষণা প্রত্যক্ষ করে (যা উপরে, আয়াত ২:১৮৩–১৮৪-তে বর্ণিত হয়েছে), তবে সে যেন সেটি রোযা দ্বারা পূর্ণ করে।

আর তোমাদের মধ্যে যে ‘অসুস্থ’ (অর্থাৎ, তাদের অন্তর অসুস্থতায় ভুগছে) বা ‘সফর’ (পুরানো, দূষিত গ্রন্থ)-এর উপর – তাহলে তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় একটি সংখ্যা, পূরণ করতে

– (এবং তারা) অন্যান্য (উপরের ‘আইয়াম’ এর মতোই) ‘আইয়াম’ এর মাঝে।

আল্লাহ্‌ তোমাদের মাধ্যমে বোধগম্যতার সহজতা কামনা করেন,
আর তিনি তোমাদের জন্য কষ্ট চান না; বরং চান তোমরা যেন পরিমাণটি পূর্ণ কর।

এবং (তিনি চান তোমরা) আল্লাহর পথনির্দেশকে শ্রেষ্ঠতর বলে ঘোষণা কর, তিনি তোমাদেরকে যে পথে পরিচালিত করেছেন তার স্বীকৃতিস্বরূপ,

এবং সম্ভবত তোমরা আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করছ। (2:185)

রমাদানের ঘোষণা বা ডিক্লারেশন বিষয়ক ধারণা
(The Concept of the Declaration of Ramadan)

রমাদানের ঘোষণা কী? এটাই ঠিক সেই বিষয় যা আমরা এখনই আলোচনা করেছি: এই ধারণা যে, আমাদেরকে প্রতিনিধি করা হয়েছে—যেমন আগের জাতিদেরকেও করা হয়েছিল—বিচার করার এবং সংশোধন করার জন্য ‘আস-সিয়াম’-এর, অর্থাৎ যারা রোযা অবস্থায় — একটি ঝুলন্ত, কষ্টকর অবস্থায় রয়েছে।

এখানে মনোযোগ দিন—এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “যে কেউ শাহিদা (شَهِدَ) করে”—অর্থাৎ প্রত্যক্ষ করে, ঘোষণা সম্পর্কে সচেতন হয়—সে যেন রোযা রাখে। এখানে কোনো বিকল্প পাঠ নেই: فَلْيَصُمْهُ মানে হলো—“তবে সে অবশ্যই রোযা রাখবে।” এটি দৃঢ় নির্দেশ।

তাহলে আমরা কী বলছি?

দুই ধরনের মানুষ রয়েছে:

১. যারা মুহাম্মদ ﷺ ও তাঁর সাহাবীদের যুগে ছিলেন, এবং ‘আস-সিয়াম’ সম্পর্কে ঘোষণার অবতরণ প্রত্যক্ষ করেছিলেন।

২. আমরা—যারা এখন এই ঘোষণার অর্থ বুঝতে পেরেছি।

আর কী? আল্লাহ চান আপনাদের মাধ্যমে—بِكُمْ—জ্ঞান সহজ হোক। এই باء (بِ) হলো باء الوسيلة—উপকরণের ‘باء’—আপনারা সেই মাধ্যম, যার মাধ্যমে উপলব্ধি সহজ হয়।

কার জন্য? আস-সিয়াম—আপনার পূর্বপুরুষদের জন্য—যারা পিপাসিত, কাঁদছে, আশাহীন। তারা শিখতে পারেনি। তারা এখনও ফিরদাউসের জন্য প্রস্তুত নয়। তাদেরকে ‘তা’আমু মিসকিন’ দেওয়া প্রয়োজন।

খুব দুঃখজনক যে ১৪০০ বছর ধরে এই অর্থগুলো ভুলভাবে বোঝা হয়েছে।

তাহলে আমাদের শারীরিকভাবে রোযা রাখা কেন জরুরি? তাদের কষ্ট উপলব্ধি করতে। তাদের অবস্থা মনে রাখার জন্য।

হ্যাঁ, আমাদের জন্য এটি শারীরিক, কিন্তু মানসিকতা একই। একবার কল্পনা করুন—পানি বা খাবার ছাড়া টানা ২৪ ঘণ্টা রোযা রাখছেন। চেষ্টা করে দেখুন দুই দিন, তিন দিন—আপনি কি তা সহ্য করতে পারবেন?

যদি না পারেন, তাহলে আপনি কীভাবে সেই অবস্থায় আইয়ামান মা’দুদাত সহ্য করবেন?

এই সবই রোযার আধ্যাত্মিক উপলব্ধির অংশ—শারীরিকভাবে, রমাদান মাসে।

And when my wayfarers ask you about me: I am near! I respond to the invitation of the inviter who supplicates to me. Let them, therefore, respond to me, and let them believe in me, perchance they are granted guidance to the correct path (that leads them out of their state of ‘Ṣiyām’). (2:186)

আর যখন আমার অন্বেষণকারীরা তোমাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে: আমি কাছেই আছি! যে আহ্বানকারী আমার কাছে দোয়া করে আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। অতএব, তারা আমার প্রতি সাড়া দিক, এবং তারা যেন আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, যাতে তারা সঠিক পথে পরিচালিত হয় (যা তাদের ‘সিয়াম’ অবস্থা থেকে মুক্তি দেয়)। (2:186)

“তারা তোমার নিকট আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে”—আল্লাহ বলছেন: “আমি নিকটে।”

এখন, “নিকটে” শব্দটি কোনো ভৌত দূরত্ব বোঝায় না—এটি পরিষ্কার। বরং এটি রূপক অর্থে নিকটতা বোঝায়। যখন কাউকে qarīb বলা হয়, তখন তার মানে হয়—সে দৃষ্টিভঙ্গি, শিক্ষাদান এবং বরকতের দিক থেকে আল্লাহর নিকটবর্তী। এই নিকটতা হলো আধ্যাত্মিক—ভৌত নয়।

নিঃসন্দেহে, আল্লাহ কোনো স্থানের সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ নন।

“আমি সাড়া দিই আহ্বানকারীর আহ্বানে…”—আমরা কিছুক্ষণ আগে দুআ সম্পর্কে কথা বলেছি, আর দুআর মধ্যে “আহ্বান” বা আমন্ত্রণের অর্থও আছে: যে আহ্বান জানায়—অর্থাৎ যে আমাকে ডাকে।

সুতরাং,

“তারা যেন আমার আহ্বানে সাড়া দেয় এবং তারা যেন আমার উপর বিশ্বাস আনে, যাতে তারা সঠিক পথে পৌঁছাতে পারে।”

এখন, “যাতে তারা সঠিক পথে পৌঁছায়”— এটি সেই সময়ের দিকেও ইশারা করছে যখন একজন ব্যক্তি হিছাবের মধ্যে থাকে—অর্থাৎ, এমন এক অবস্থা যেখানে সে স্থগিত অবস্থায় আছে, সিদ্ধান্ত অপেক্ষমাণ।

ইন শা’ আল্লাহ, আমাদের কেউই সেই স্থগিত সময়ের মধ্য দিয়ে যাবো না। ইন শা’ আল্লাহ, আমরা সবাই এমনভাবে চলে যাবো, যেন সেই স্থগিত অবস্থার মধ্যে পড়তে না হয়।

তবে যদি আপনি নিজেকে সেই “সাসপেনশনের” অবস্থায় খুঁজে পান, তাহলে sabeel শব্দটি মনে রাখবেন—আল্লাহর কাছে দুআ করুন যেন তিনি আপনাকে sabeel দেখান, অর্থাৎ সঠিক পথের দিকনির্দেশ—এমনকি সেই ঝুলন্ত অবস্থাতেও।

অতএব,

“তিনি সঠিক পথের প্রতি দিকনির্দেশনা দেন।”

তাই এখানে যে “দিকনির্দেশনা” বা guidance এর কথা বলা হচ্ছে, তা দুই শ্রেণির মানুষের জন্য হতে পারে:

  1. যারা এখনো এই দুনিয়ায় জীবিত,

  2. যারা এখনো স্থগিত অবস্থায় আছে—তাদের ফিরদাউসে প্রবেশ এখনো হয়নি।

অর্থাৎ, এটি দীর্ঘ আখিরাতের একটি সময়—তারা এখনো ফিরদাউসে প্রবেশ করেনি।


তাহলে প্রশ্ন হলো: এই আয়াতটি এখানে কেন রাখা হয়েছে?

কেন এই আয়াতটি এমন একটি প্যারা/অনুচ্ছেদের মধ্যে রাখা হয়েছে, যার পুরোটা রমজানের রোযা সংক্রান্ত বিধান নিয়ে?

কারণ, তাফসীরের বইগুলো এবং অনুবাদের বইগুলো আমাদের বলেছে:

  • এর আগের আয়াতগুলো রমজানের রোযা নিয়ে আলোচনা করছে।

  • এর পরের আয়াতটিও রমজান সম্পর্কিত—রাতের সময় রোযা ভাঙা ইত্যাদি নিয়ে।

তাহলে প্রশ্ন হলো: এই নির্দিষ্ট আয়াতটি—যেটি অত্যন্ত সুন্দর, গভীর এবং ধর্মতাত্ত্বিক অর্থে সমৃদ্ধ—এটি কেন ঠিক মাঝখানে রাখা হয়েছে?

এই দারুণ তাত্ত্বিক আয়াতটির আগের ও পরের আয়াতগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক কী?

তারা এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না।

তাই এই প্রশ্নটি নিজেই একটি উত্তর দাবি করে।


উত্তর হলো:

আমরা যখন আয়াত ১৭৮ থেকে ১৮৭ পর্যন্ত সবকটি আয়াত ব্যাখ্যা করলাম, তখন দেখা গেল যে পুরো অংশটি একটি নিরবিচ্ছিন্ন ধারার উপর ভিত্তি করে গঠিত—একটি একক মূল বিষয়বস্তুর উপর।

এই পুরো প্যারাটিই একই বিষয়ের উপর—দশটি আয়াত, যার মধ্যে এই আয়াতটিও রয়েছে।

মনে করুন, আয়াত ১৮৫-র আগের আয়াতগুলোয় আমরা কী দেখেছি? বিষয়টি ছিল: হয়তো তুমি যোগাযোগ করবে

কিন্তু কার সঙ্গে?

আল্লাহর সঙ্গে, ফেরেশতার মাধ্যমে। খুব ভালো।

এরপর তুমি আল্লাহর দিকনির্দেশনার শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করে তাঁর মহিমা ঘোষণা করো—তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতায়।

এই সবকিছুই আবশ্যক করে তোলে যে আমরা যেন জানি:

  • কীভাবে কথা বলতে হয়,

  • কীভাবে যোগাযোগ করতে হয়,

  • কীভাবে হাত বাড়িয়ে দিতে হয়,

  • কীভাবে আল্লাহর সাহায্য চাইতে হয়।

এই জায়গাতেই আল্লাহ এই আয়াতটি রেখেছেন।

রাসূল ﷺ যেন শিক্ষা দেন।

কিন্তু শুধু রাসূল ﷺ-ই নয়—যারা এই প্যারাটির বিষয়বস্তু বুঝেছে, তাদের সকলের জন্য এটি প্রযোজ্য।

যদি আমার অন্বেষণকারীরা তোমার কাছে এসে প্রশ্ন করে—আমরা কীভাবে এটা করবো?
কীভাবে পথ খুঁজে পাবো?
কীভাবে আল্লাহর দিক থেকে সাহায্য নেবো?

আল্লাহ এখানে রাসূলকে কোনো জবাব দিতে বলেন না। আমাদেরও বলেন না।

আল্লাহ নিজেই সরাসরি উত্তর দেন।

যখনই কেউ আল্লাহ সম্পর্কে জানতে চায়—এইটিই হলো আসল শিক্ষা—আল্লাহ কোনো মাধ্যম নিযুক্ত করেন না।

আল্লাহ নিজেই জবাব দেন।

তুমি যদি সত্যিই আল্লাহর সঙ্গে সংযুক্ত হতে চাও—আল্লাহ তোমার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হন।

যারা আল্লাহর দিকে এগিয়ে আসে—আল্লাহ তাদের শেখাতে কোনো মাধ্যম দেন না।

আল্লাহ নিজেই তাদের দেখিয়ে দেন।

হ্যাঁ, কখনো সেই “দেখিয়ে দেওয়া” একটি শিক্ষককে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে—কিন্তু সাহায্য আসে সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকেই।

আপনাকে এটা বুঝতে হবে।

শুধু আল্লাহকে ডাকুন।

আল্লাহ সাড়া দেন।

আল্লাহ আপনাকে জবাব দেন—আপনার দুআর সম্মানরূপে।

“তারা যেন সাড়া দেয়…”
তারা যেন সাড়া দেয়, যা কিছু তারা এই প্রক্রিয়ায় শিখে।”

আমি আশা করি এটা আপনার জন্য গভীরভাবে সুন্দর মনে হয়েছে।

আমার কাছে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আধ্যাত্মিক মাত্রা বলে মনে হয়েছে।


সুতরাং, এটি সেই ধারাবাহিকতারই একটি অংশ, যা কেবল রমজানে শারীরিক রোযা রাখার ঐতিহ্যবাহী ব্যাখ্যার উপর নির্ভর করে না।

এটি কোনো একমাত্রিক বিষয় নয়—যেমনটা আমাদের শেখানো হয়েছে।

এটি শুধুই উপরি উপরি স্তরের (Ẓina) উপলব্ধি নয়।

এটি তার চেয়েও অনেক বেশি গভীর।

It has been made permissible to you (not by Allahh),

O (You who are like the) Nighttime for those who are in a state of fasting (in their afterlife),

to provide debased talk (that is) attributed to the ones learning from you:

They are a source of confusion for you, and you are a source of confusion for them!

Allahh has exposed that you have been betraying your selves,

and has brought a cessation to/upon you (in the QurꜤān) and absolved (beyond) you.

So now (I challenge you to) share with them the glad tidings,

and (I dare you to) look forward to what Allahh has written against you!

And ‘eat’ and ‘drink’ (like livestock), until the white thread becomes distinguished to you from the black thread from the (new) dawn (i.e., from the ‘Ḥūr’ or Āyāt of the QurꜤān):

Then you too will have to complete (the count, just like) those who are in a state of fasting (in their afterlife), attributed to the nighttime.

And you shall not (be able to) offer them glad tidings while you are on a hooked path, (when they seek true understanding) in the occasions of submission.

Those are Allahh’s linguistic boundaries, and you shall not come near (to realize) them!

This is how Allahh makes clear his signs to people, perchance they will be disciplined (in engaging the scripture)! (2:187)

“তোমাদের জন্য তা বৈধ করা হয়েছে (আল্লাহর পক্ষ থেকে নয়),

হে তোমরা—যারা রাত্রির মতো, তাদের জন্য যারা ‘সিয়াম’ অবস্থায় রয়েছে (তাদের পরকালীন জীবনে),

হীন কথাবার্তা প্রদান করা (যা) তোমাদের থেকে যারা শিখছে তাদের উপর আরোপীত হয়:

তোমরা তাদের জন্য বিভ্রান্তির উৎস, এবং তারাও তোমাদের জন্য বিভ্রান্তির উৎস!

আল্লাহ প্রকাশ করেছেন যে, তোমরা তোমাদের ‘নিজ’দের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছ,

এবং (কোরআনের প্রতি) তোমাদের বিরতি আরোপ করেছেন এবং তোমাদের (পেরিয়ে) বিমুক্ত করেছেন।

সুতরাং এখন (আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি) তাদের সঙ্গে সুসংবাদ ভাগ করো,

এবং (সাহস করে) যা আল্লাহ তোমাদের বিরুদ্ধে লিখেছেন তা প্রত্যাশা করো!

এবং ‘খাও’ ও ‘পান করো’ (গবাদি পশুর মতো), যতক্ষণ না সাদা সুতো তোমাদের কাছে কালো সুতোর থেকে পৃথক হয়ে যায় (নতুন) প্রভাত থেকে (অর্থাৎ, কোরআনের ‘হুর’ বা আয়াত থেকে):

তারপর তোমাদেরও সম্পূর্ণ করতে হবে (সংখ্যা, যেমনি) যারা ‘সিয়াম’-এর অবস্থায় রয়েছে (তাদের পরকালীন জীবনে), রাতের সাথে সম্পর্কিত।

এবং তোমরা তাদের সুসংবাদ দিতে পারবে না যখন তোমরা বক্র পথে থাকবে, (যখন তারা সত্য বোঝার সন্ধান করবে) আনুগত্যের ক্ষেত্রে।

এগুলো আল্লাহর ভাষাগত সীমারেখা, এবং তোমরা সেগুলোর নিকটবর্তী হতে পারবে না (বা বুঝতে পারবে না)!

এভাবেই আল্লাহ তার নিদর্শনগুলো মানুষের সামনে সুস্পষ্ট করে দেন, সম্ভবত তারা নিয়মানুবর্তি হবে (কিতাবের সাথে জড়িত হতে)!

“তোমাদের জন্য তা বৈধ করা হয়েছে”—

এখন, আমি চাই আপনি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। খোলা চোখে পড়ুন: এখানে কি বলা হয়েছে “আল্লাহ”? না—এখানে বলা হয়েছে: “তোমাদের জন্য তা বৈধ করা হয়েছে।” কে বৈধ করেছেন? এখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়নি যে ‘আল্লাহ বৈধ করেছেন’।

এখন, “লাইল” (রাত্রি) এখানে একটি অন্তর্বর্তী ক্লজ। এটি একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে সম্বোধন করছে। মনে রাখুন, কুরআনিক ভাষায় “লাইল” অনেক সময় এমন ব্যক্তিদের বুঝায় যারা একটি স্থগিত অবস্থায় থাকে—তৃষ্ণা, ক্ষুধা, এবং তাপ সহ্য করছে—যারা এক ধরণের আসমানী সিয়ামে আছে, রূপকভাবে। তাদের “লাইল” কী? তাদের “লাইল” হচ্ছে অন্ধকার—এবং যারা এই অন্ধকারকে আরও বাড়িয়ে দেয়। আল্লাহ, যিনি সর্বোচ্চ, এখানে জীবিত মানুষদের সম্বোধন করছেন এবং বলছেন: আপনি হচ্ছেন সেই অন্ধকার, যারা সিয়ামে থাকা মানুষদের জন্য আরও অন্ধকার তৈরি করেন। এটি একটি তিরস্কারসূচক বর্ণনা।

এখানে “লাইল” বহুবচনও হতে পারে—এটি একটি অবস্থা, একটি অবস্থান। তাই যারা অন্যদের জন্য অন্ধকার বাড়ায়, তাদেরই এখানে বোঝানো হচ্ছে।

যারা “লাইল”—অন্ধকার—হিসেবে বর্ণিত, তারা সেই লোকজন যারা রোযাদারদের কোন উপকার করেন না— আখিরাতের অর্থে, কিংবা শিক্ষার আলোয়। এটি একটি সমালোচনা। আল্লাহ ব্যঙ্গাত্মকভাবে বলছেন তাদের, যারা রোযাদারদের জন্য কোন আলোক দান করেন না—যারা কোন ভালো কিছু দেন না।

এত বিশ্লেষণের উদ্দেশ্য কী? কারণ পরবর্তী অংশটি যদি আপনি বাহ্যিকভাবে বোঝেন, তাহলে এটি অত্যন্ত অশোভন হয়ে দাঁড়ায়।

এটি বুঝুন মনোযোগ দিয়ে: যদি আপনি পুরো আয়াতটিকে বাহ্যিকভাবে নেন, তাহলে পরবর্তী লাইনটি ভয়াবহরকম অশ্লীল অর্থ দাঁড় করায়।

কী বলা হয়েছে সেখানে?

……………………………………………………………….

এই অশ্লীল ব্যাখ্যাকে গ্রহণ করার পরিবর্তে আপনাকে থেমে ভাবতে হবে: এটা কি সত্যিই অর্থ হতে পারে? উত্তর: না, এটি হতে পারে না।

আমি এখানে যা করছি তা হচ্ছে সঠিক ব্যাখ্যার দিক দেখানো—এটি একটি ব্যঙ্গাত্মক ভাষণ, একটি গোষ্ঠীকে উদ্দেশ্য করে, যাদেরকে বলা হয়েছে “রোযাদারদের জন্য অন্ধকার”। অর্থাৎ, যারা তাদের অন্ধকারে ফেলেছে।

তোমাদের জন্য বৈধ হয়েছে”—কিন্তু কে করেছে? আল্লাহ নন। এখানে আল্লাহর নামই নেই। তাহলে কে?

আপনার কিছু শিক্ষক করেছেন।

আপনার পূর্বসূরিরা এটি বৈধ করে দিয়েছিলেন এবং সেই অনুমোদনই প্রচার করেছেন। তারা যে জিনিসটি বৈধ করেছিলেন তা হলো—রফাস—অশ্লীল ভাষা এবং সেই অশ্লীল ব্যাখ্যাগুলোর শিক্ষা।

এখন এখানেই ব্যঙ্গচিত্র আরও গভীর হয়: কুরআন বলে—তারা আপনার জন্য বিভ্রান্তি এবং আপনি তাদের জন্য বিভ্রান্তি। “লাবাসা” অর্থ হলো বিভ্রান্তি, মিশ্রণ, জটিলতা।

তাহলে কুরআন কী করছে এখানে? এটি একটি ব্যঙ্গাত্মক ভাষায় বলছে—যারা ভুল বুঝেছে, তাদেরকে উপহাস করে বলছে। এবং আমরা দেখব, পুরো আয়াতজুড়ে এই অর্থ-প্রবাহ একটানা চলে এসেছে।

হতে পারে এই ব্যাখ্যা অনেককে আহত করবে, কিন্তু আল্লাহ কখনোই এই অশ্লীল, সরলতর ব্যাখ্যাকে অনুমোদন দেননি। এটি একটি সাহিত্যিক ব্যঙ্গ—তাদের প্রতি, যারা কুরআনকে ভুল বুঝিয়েছে।

“তারা তোমাদের বিভ্রান্ত করছে, আর তোমরা তাদের বিভ্রান্ত করছ।”

এরপর বলা হয়েছে:

“আল্লাহ প্রকাশ করেছেন যে, তোমরা তোমাদের ‘নিজ’দের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছ,

এটি মূল চাবিকাঠি: আপনি নিজেই নিজের নফসকে প্রতারিত করছিলেন। এ কারণেই আপনাকে “লাইল”—অন্ধকার—হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

আপনারা হচ্ছেন সেই অন্ধকার যারা অনুসারীদের পথ বিভ্রান্ত করেছেন। একই ভুল শিক্ষা বারবার প্রচার করেছেন।

তারপর বলা হয়েছে:

এবং (কোরআনের প্রতি) তোমাদের বিরতি আরোপ করেছেন এবং তোমাদের (পেরিয়ে) বিমুক্ত করেছেন।

“তোমাদের জন্য বৈধ হয়েছে”—কে করেছে? আল্লাহ নন।

আপনার কিছু শিক্ষক করেছেন। আপনার কিছু পূর্বসূরি এই অশ্লীল শব্দ এবং ব্যাখ্যাকে বৈধ করেছেন।

তারপর আল্লাহ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন:

“সুতরাং এখন (আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি) তাদের সঙ্গে সুসংবাদ ভাগ করো,

এবং (সাহস করে) যা আল্লাহ তোমাদের বিরুদ্ধে লিখেছেন তা প্রত্যাশা করো!”

এটা ব্যঙ্গ: হ্যাঁ, দিন সুসংবাদ।

কিসের সুসংবাদ? বিচ্ছিন্নতার, শাস্তির।

এবং তারাও আপনাকে সেই “সুসংবাদ” দেবে।

এই সবই ব্যঙ্গাত্মক কুরআনিক style। যেমন আল্লাহ বলেন: “তোমাদের প্রমাণ আনো, যদি সত্যবাদী হও।” এটি একটি চ্যালেঞ্জ। অনুমোদন নয়।

স্মরণ রাখুন: কুরআনের সব আদেশ অনুমোদন নয়—কখনো কখনো তা একটি ব্যঙ্গাত্মক চ্যালেঞ্জ।

এখানে আল্লাহ চ্যালেঞ্জ করছেন: এগিয়ে যাও, একে অপরকে শাস্তির সুসংবাদ দাও।

তারপর বলা হয়েছে: “তোমরা খাও ও পান করো (গবাদি পশুর মতো)…”

অন্য আয়াতে, যারা বার্তাকে প্রত্যাখ্যান করে, তাদেরকে পশুর মতো খাওয়া-পানের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এখানেও সেই ছবি আছে।

তোমরা খাও এবং পান করো—তোমাদের বিকৃত বোঝাপড়া থেকে—কতক্ষণ?

যতক্ষণ না সাদা সুতো স্পষ্ট হয়ে ওঠে কালো সুতো থেকে—নতুন ফজর থেকে।

ফজর কী? এটি নতুন জ্ঞান, নতুন সুযোগ, বিকৃত ব্যাখ্যার জট খুলে ফেলার মুহূর্ত।

তারপর, রোযাদারদের মতো, আপনাকেও পূর্ণ হিসেব দিতে হবে—পুরো গণনা সম্পূর্ণ করতে হবে।

আপনারাই সেই গোষ্ঠী যারা রাতের সঙ্গে জড়িত—অন্ধকারেরা—“আল-লাইল।”

আল্লাহ অন্ধকার যুগের প্রজন্মকে সতর্ক করছেন, জানাচ্ছেন—তাদের শিক্ষা আর টিকবে না।

এবং আল্লাহ আমাদের এটি শেখাচ্ছেন… তাদেরকে একটি উদাহরণ বানিয়ে।

এটি একটি ঈশ্বরীয় ব্যঙ্গ—একটি সতর্কতা এবং একটি চ্যালেঞ্জ।

“আর তোমরা তাদেরকে সুসংবাদ দিতে পারবে না।”
কার কথা বলা হচ্ছে এখানে? সেইসব মানুষের—যারা সঠিক আত্মসমর্পণের উপলক্ষগুলো খুঁজছেন। আমাদের মতো যারা অনুসন্ধান করছেন—সেই উপলক্ষ, সেই উপলব্ধি, সেই উৎস—যেখানে প্রকৃত আত্মসমর্পণ সম্ভব, যেখানে আমরা সিজদায় যেতে পারি—আমাদের মস্তিষ্ককে সরাসরি কিতাবের উপর রাখি—যাতে আমাদের জ্ঞানভান্ডার সরাসরি কুরআনের মধ্য থেকে পূর্ণ হয়। সরাসরি। কোন মধ্যস্থতা ছাড়াই। মাঝখানে কিছু নেই।

আর অনুগ্রহ করে, আমাকে বলবেন না—আমার মাথা আর কুরআনের মাঝে কিছু রাখো। আমি আশা করি আপনি বুঝেছেন আমি কী বলতে চাচ্ছি।

যখন আপনি সিজদার অবস্থায় থাকেন—আপনার মাথা, যেখানে আপনার শিক্ষা, জ্ঞান, উপলব্ধি কেন্দ্রীভূত—এটা রূপক অর্থে বোঝানো হচ্ছে—তখন তা সরাসরি সংযুক্ত থাকে কুরআনের সাথে। কোন কিছুর মাধ্যমে নয়। আপনি সরাসরি কুরআন থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন।

এখন, আল্লাহ সেই একই গোষ্ঠীকে বলছেন—সে খারাপ, খারাপ গোষ্ঠীকে:
“তোমরা সুসংবাদ দিতে পারবে না।”

আপনি যদি কোনও পথের সঙ্গে আটকে থাকেন—আপনি কি জানেন, তার মানে কী?
এর মানে, তারা একটি কিছুর সঙ্গে গেঁথে আছে। তাদের মধ্যে একটা বাঁক আছে।

আল্লাহ তাদেরকে এইভাবেই বর্ণনা করছেন: তোমরা বাঁকা, বিকৃত।
তোমরা সোজা নও। তোমরা বেঁকে গেছো।

তোমরা সাধারণ মানুষদের—যারা সত্যিকারের আত্মসমর্পণ করতে চায় কুরআনের কাছে—তাদেরকে কোনও সুসংবাদ দিতে পারবে না।

অন্যভাবে বললে, তারা তোমাদের কথায় বিশ্বাস করবে না।
তারা তোমাদের মিথ্যা যুক্তি আর বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যা মেনে নেবে না।

আল্লাহ তাদেরকে “রাত্রি”—আন্ধকার হিসেবে বর্ণনা করছেন।
আমি জানি, এটা খুব গভীর কথা। কিন্তু এভাবেই এই আয়াত আমাদেরকে শিক্ষা দেয়।

হ্যাঁ, কিছু লোক হয়তো বুঝবে না, দুঃখিত। আর কিছু লোক হয়তো কষ্ট পাবে।
তাতে কিছু যায় আসে না। আমরা কাউকে ভয় করি না। আমরা সত্য বলি—যারা খারাপ বলবে, তারা বলুক।

তারপর আল্লাহ আমাদের জন্য সুসংবাদের দেওয়ার দিকেই চলে যান।

আল্লাহর ভাষাগত সীমারেখা আলিদ—সেইসব উপলক্ষগুলোতে—শারীরিক স্থান নয়, বরং সেই সুযোগগুলো, সেই মুহূর্তগুলো যেখানে আত্মসমর্পণ সম্ভব। যেখানে আল্লাহর বাণীর অর্থ বোঝা যায়। এটাই আল্লাহর সীমারেখা—সেই ভিত্তি যা তিনি ব্যাখ্যা করছেন।

আর আল্লাহ বলছেন:
“তোমরা তাদেরকে কিছুই দিতে পারবে না।
তোমরা তাদেরকে কিছুই শেখাতে পারবে না।
তোমাদের কাছে তাদের শেখানোর মত কিছুই নেই।”

তারপর আল্লাহ নিশ্চিত করেন:
“তোমরা বুঝতেও পারবে না তারা কী করছে।”
তোমরা সেই উপলক্ষে ঘেঁষেও যেতে পারবে না—যখন তারা সিজদা ও আত্মসমর্পণের মধ্যে থাকে।

এটাই সেই অংশ—এই আয়াতের সিল-মোহর।
এইভাবেই আল্লাহ তাঁর নিদর্শনগুলো স্পষ্ট করেন মানুষের জন্য—কেন?—যাতে তারা নিয়মানুবর্তিভাবে কুরআনের সাথে যুক্ত হয়।

শারীরিক রোযা (সিয়াম) নিয়ে কী বলা হয়েছে?

◦ প্রকৃত আত্মিক অনুশীলন হলো এ জীবনে শারীরিক ‘সিয়াম’ অনুভব করার মধ্য দিয়ে—
 এই আশায় যে:
 - যারা আখিরাতে ‘সিয়াম’-এর ভোগান্তিতে রয়েছে, তাদের স্মরণে রাখা;
 - যেন আপনি কখনও আখিরাতে সেটি অনুভব না করেন!

◦ কিন্তু শারীরিক রোযা পালন না করার জন্য কোনো “পার্থিব” শাস্তি নেই!

◦ যারা ঐ ঘোষণা প্রত্যক্ষ করেছে, তাদের জন্য এটি ফরজ।

আমাদের প্রিয় মুহাম্মদ ﷺ নিয়মিতভাবে রাতের সালাত আদায় করতেন—যেটি হলো সালাতুল লাইল।

কিন্তু তার সালাত ছিল সম্পূর্ণভাবে তাদাব্বুর-নির্ভর।
তিনি যখন কুরআন তিলাওয়াত করতেন, তখন তিনি ভাবতেন, গভীরভাবে চিন্তা করতেন, এবং সমস্ত আয়াতকে একে অপরের সাথে সংযুক্ত করতেন।

এইভাবেই তিনি তাদাব্বুর করতেন।

প্রথম যুগের মুসলিমরাও তাদাব্বুর এভাবেই করতেন:
তারা মুখস্থ থেকে কুরআন পর্যালোচনা করতেন, এবং যখন কেউ তিলাওয়াত করত, তখন মনোযোগ দিয়ে শুনতেন।

তাদের কাছে কম্পিউটার, বই, ডাটাবেস, গবেষণার যন্ত্রপাতি—এইসব কিছু ছিল না।
তাদের তাদাব্বুর ছিল এইটুকুই—এটাই ছিল তাদের একমাত্র পথ।

◦ আয়াত ৩৪:১২ এর মধ্যে এর একটি স্পষ্ট ভিত্তি পাওয়া যায়:

And for Sulayman, (we allowed him to learn through) the triumphant ones:
Their morning journey (brought) a declaration, and their evening journey (brought) a declaration … (34:12)

এবং সুলাইমানের জন্য, (আমরা তাকে শিখতে দিয়েছিলাম) বিজয়ীদের মাধ্যমে: তাদের সকালবেলার সফর (নিয়ে আসত) এক ঘোষণা, আর সন্ধ্যাবেলার সফরও (নিয়ে আসত) এক ঘোষণা…

নংসূরার নামমোট আয়াতঅনুবাদ করা হয়েছে
1আল- ফাতিহা77
2আল-বাকারা28664
3আল-ইমরান20056
4নিসা17632
5আল-মায়িদাহ12035
6আল-আনাম16535
7আল-আরাফ20662
8আল-আনফাল7511
9আত-তাওবাহ1298
10ইউনুস10925
11হুদ12325
12ইউসুফ111111
13আর-রাদ4310
14ইবরাহীম526
15আল-হিজর9918
16আন-নাহল12838
17বনি ইসরাইল11129
18আল-কাহফ11074
19মারিয়াম9853
20ত্বা হা13539
21আল-আম্বিয়া11239
22আল-হাজ্ব7811
23আল-মুমিনুন11832
24আন-নূর646
25আল-ফুরকান7744
26আশ-শুআরা22735
27আন-নমল9356
28আল-কাসাস8828
29আল-আনকাবুত6914
30আল-রুম6034
31লুকমান3424
32আস-সাজদাহ309
33আল-আহযাব7335
34আস-সাবা547
35আল-ফাতির4510
36ইয়া সিন8383
37আস-সাফফাত18252
38সোয়াদ8839
39আয-যুমার7533
40আল-মুমিন8520
41ফুসসিলাত5420
42আশ-শূরা539
43আয-যুখরুফ8935
44আদ-দুখান5919
45আল-জাসিয়াহ3712
46আল-আহকাফ3517
47মুহাম্মদ3813
48আল-ফাতহ299
49আল-হুজুরাত184
50ক্বাফ4524
51আয-যারিয়াত6017
52আত-তুর493
53আন-নাজম6262
54আল-ক্বমর5519
55আর-রাহমান7878
56আল-ওয়াকিয়াহ9696
57আল-হাদিদ297
58আল-মুজাদিলাহ222
59আল-হাশর243
60আল-মুমতাহানা132
61আস-সাফ146
62আল-জুমুআহ115
63আল-মুনাফিকুন111
64আত-তাগাবুন182
65আত-ত্বালাক121
66আত-তাহরীম126
67আল-মুলক308
68আল-ক্বলম528
69আল-হাক্ক্বাহ5219
70আল-মাআরিজ444
71নূহ286
72আল-জ্বিন2828
73মুযাম্মিল202
74মুদাসসির561
75আল-কিয়ামাহ4023
76আল-ইনসান3131
77আল-মুরসালাত5050
78আন-নাবা4040
79আন-নাযিয়াত463
80আবাসা4242
81আত-তাকবির2929
82আল-ইনফিতার1919
83আত-তাতফিক367
84আল-ইনশিকাক2525
85আল-বুরুজ222
86আত-তারিক1717
87আল-আলা190
88আল-গাশিয়াহ261
89আল-ফজর304
90আল-বালাদ207
91আশ-শামস1515
92আল-লাইল210
93আদ-দুহা111
94আল-ইনশিরাহ88
95আত-তীন81
96আল-আলাক1919
97আল-ক্বাদর55
98আল-বাইয়িনাহ83
99আল-যিলযাল88
100আল-আদিয়াত1111
101আল-কারিয়াহ110
102আত-তাকাছুর88
103আল-আসর30
104আল-হুমাযাহ99
105ফীল55
106আল-কুরাইশ41
107আল-মাউন70
108আল-কাওসার30
109আল-কাফিরুন60
110আন-নাসর30
111লাহাব55
112আল-ইখলাস40
113আল-ফালাক55
114আন-নাস66
  62362307